বাঘ বাঁচাতে রেড অ্যালার্ট

বাঘের সুরক্ষায় এ বার নেওড়াভ্যালিতে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করল বন দফতর। ওই দফতর সূত্রে খবর, এক মাসের মধ্যে উত্তরবঙ্গের নেওড়াভ্যালির জঙ্গলে পরপর তিন দফায় বাঘের ছবি ক্যামেরা বন্দি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২০
Share:

বাঘের সুরক্ষায় এ বার নেওড়াভ্যালিতে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করল বন দফতর। ওই দফতর সূত্রে খবর, এক মাসের মধ্যে উত্তরবঙ্গের নেওড়াভ্যালির জঙ্গলে পরপর তিন দফায় বাঘের ছবি ক্যামেরা বন্দি হয়েছে। পাশাপাশি বনকর্মীদের আধুনিক অস্ত্র সম্ভার বাড়ানো ও শূন্য পদ পূরণের ব্যাপারেও উদ্যোগ শুরু হয়েছে। বন্যপ্রাণী রয়েছে, রাজ্যের এমন সমস্ত বনাঞ্চলের ক্ষেত্রেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও নিশ্চিদ্র করার পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। শুক্রবার বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন এ কথা জানান। তিনি জানান, স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র কেনার ব্যাপারে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সবুজ সঙ্কেত পেলেই চাহিদা অনুযায়ী অস্ত্র কেনার ব্যবস্থা হবে। পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে ২৬৩টি শূন্য পদে বনরক্ষী নিয়োগের চেষ্টাও হচ্ছে। ছ’মাসের মধ্যে নিয়োগ হবে বলে আশা করছি। জাতীয় বাঘ সংরক্ষণ কমিটির পূর্ব ভারতের আইজি দেওপ্রসাদ বাঙ্কওয়াল বলেন, “আমরা শীঘ্রই অসম থেকে নিয়ে এসে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প ও জলদাপাড়ায় রয়্যালবেঙ্গল টাইগার ছাড়ব।”

Advertisement

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সংরক্ষিত বন্যপ্রাণীর তালিকায় বাঘের নাম প্রথম সারিতে রয়েছে। সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় আগে থেকেই বাড়তি সতর্কতা রয়েছে। এত দিন নেওড়াভ্যালিতেও বাঘের অস্তিত্বের ব্যাপারে বনকর্তাদের একাংশ দাবি করলেও তা প্রমাণিত হয়নি। গত ১৯ জানুয়ারি পেডংয়ের জিপ চালক আনমোল ছেত্রী সেখানে বাঘের ছবি ক্যামেরা বন্দি করে শোরগোল ফেলে দেন। পরে ২৫ জানুয়ারি ও ১৫ ফেব্রুয়ারি আরও দুই দফায় বন দফতরের বসান ট্র্যাপ ক্যামেরা বন্দি হয়েছে বনের রাজার গতিবিধি। ওই খবরে উচ্ছ্বাসের মধ্যে চোরাশিকারিরা যাতে কোনও সুযোগ নিতে না পারে সে কথা ভেবেই সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, পুরো বনাঞ্চলের এলাকার মানচিত্র ধরে নজর রাখা হচ্ছে। একটি নজরদার দল দৈনিক গড়ে ৮ কিমি এলাকায় নজর রাখছেন। পালা করে ওই কাজ হচ্ছে। বনকর্মীদের কেউ যাতে কাজে গাফিলতি না করেন, সে জন্য মোবাইলে ছবি তুলতে বলা হয়েছে।

পরিবেশপ্রেমীরা জানাচ্ছেন, উত্তরবঙ্গে চোরাশিকারিদের দৌরাত্ম্য নতুন নয়। গত কয়েক বছরে জলদাপাড়া থেকে মহানন্দা, বক্সা থেকে চাপরামারির জঙ্গলে বেশ কিছু বন্যপ্রাণীর রহস্য মৃত্যু হয়। গুলিবিদ্ধ, জখম গন্ডার, হাতি উদ্ধারের ঘটনাও হয়েছে। সামনে এসেছে সাপের বিষ পাচারের চক্রও। তাই নেওড়াভ্যালির পাশাপাশি সর্বত্র নজরদারি বাড়ানর পাশাপাশি শূন্যপদ পূরণের দাবি বহু দিন থেকে তোলা হচ্ছে। ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “বাঘ সহ উত্তরের সর্বত্র বন্যপ্রাণ বাঁচাতে কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো এখনই প্রয়োজন। সেই সঙ্গে ড্রোন থেকে ডগ স্কোয়াডের মতো আধুনিক সব ব্যবস্থায় নজরদারি চাই।”

Advertisement

বনমন্ত্রী জানান, মার্চে বন দফতরের শীর্ষ কর্তারা বনবান্ধব উৎসব করবেন জলপাইগুড়ি ও রাজাভাতখাওয়া এলাকায়। মূল উদ্দেশ্য রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ব্ল্যাক প্যান্থারের মতো বন্যপ্রাণীদের সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন