প্রতীকী ছবি।
কালজানি নদীর গতিপথ দক্ষিণ থেকে উত্তরমুখী হচ্ছে। জলের তোড়ে ইতিমধ্যে বিঘের পর বিঘে জমির কলাবাগান, আবাদি জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। ভাঙনে বিপন্ন হওয়ার মুখে তুফানগঞ্জের বলরামপুর ২ পঞ্চায়েতের সরেয়ারপাড় গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। স্বাভাবিক ভাবে উদ্বেগও বেড়েছে। বাসিন্দারা জানান, দ্রুত ভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে গ্রামের বহু বসতবাড়িও নিশ্চিহ্ন হতে পারে।
সেচ দফতর ও প্রশাসনের অন্দরের খবর, ওই কাজের দায়িত্ব নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। সেচ দফতর সূত্রের দাবি, নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় ভাঙন ঠেকানোর কাজ ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগেই সাধারণত করা হয়। অন্যদিকে ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্য, যা অবস্থা তাতে বাঁশ, বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোখার চেষ্টা করে কতটা লাভ হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। পাথর দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর কাজ করা দরকার। সেচ দফতরেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। যদিও ওই ব্যাপারে সরাসরি মুখ খুলতে চাননি কেউই। সেচ দফতরের কোচবিহারের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র স্বপন সাহা বলেন, “বরাদ্দ পেলে কাজ হবে।” তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের বিডিও রাজু লামা বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে সেখানে কী করা যায় সেটাও দেখা হচ্ছে।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুই দফতরের এই তরজায় ভাঙন ঠেকানো শিকেয় উঠেছে। এ বারের বর্ষায় নদী ফের ফুঁসে ঊঠলে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে ওঠার আশঙ্কাও রয়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দেওচড়াই-বলরামপুরের মাঝে কালজানি নদীতে নতুন সেতু তৈরি হয়েছে।
ভাঙন ঠেকানো না হলে ওই সেতুর ক্ষতির আশঙ্কাও করছেন অনেকে। বিস্তীর্ণ এলাকার জমির পাট গাছ বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কায় অনেকে আগাম সেসব কেটে নিচ্ছেন। সরেয়ারপাড়ের বাসিন্দা তুফানগঞ্জ ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি ছামিউল ইসলাম বলেন, “নতুন সেতু থেকে পুরনো বাঁধের সংযোগস্থল পর্যন্ত অন্তত ৮০০ মিটার এলাকায় বাঁধ তৈরি করা দরকার।” স্থানীয় বাসিন্দা সুলতান মিয়াঁ বলেন, “গত বারের চেয়ে ভাঙনের তীব্রতা বেশি। বর্ষায় বসতবাড়ি রক্ষা করা নিয়েই চিন্তায় আছি।”