মাংস নিয়ে অভিযানে পুর-কর্মীরা। রায়গঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
হোটেলের তিন কর্মীর মধ্যে দু’জনকে ছুটি দিয়েছেন মালিক। কিছুদিন কাজে আসতে বারণ করেছেন। কারণ, দুপুরে যেখানে খদ্দেরের ভিড় থাকত, এখন সেখানে ফাঁকা। কেউ রেস্তোরাঁর জন্য অল্প করে মাংস কিনলেও অনেক জায়গাতেই শুধু আলু আর ডিম দিয়েই বিরিয়ানি খাচ্ছেন মানুষ। ভাগাড়-কাণ্ডের পরে এমনই ছবি রায়গঞ্জ শহরে।
ভাগাড়ের পচা মাংস উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও সরবরাহ হতো জেনে বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। শিলিগুড়ি, মালদহের পরে হোটেল, রেস্তরাঁগুলিতে নজরদারি চালাতে এ বার অভিযানে নেমেছে রায়গঞ্জ পুরসভা। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি মোড়ে হোটেল, রেস্তোরাঁগুলিতে অভিযান চালানো হয়। একটি বিরিয়ানির দোকানে মাংস বাসি থাকায় সব ফেলে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। অপর একটি রেস্তোরাঁ ও হোটেলে মাংস নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ হয়েছে।
রায়গঞ্জ পুরপ্রধান সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘লাগাতার অভিযান চলবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের ধরতে পুরসভা সচেষ্ট।’’ রায়গঞ্জের বিদ্রোহী মোড় লাগোয়া একটি বিরিয়ানির দোকানের মালিক গৌতম সাহা জানান, ভাগাড়-কাণ্ডের জেরে কারবারের করুণ অবস্থা। বাধ্য হয়ে তিন কর্মীর মধ্যে দু’জনকে ছুটি দিয়েছি। আগে দিনে ১০ হাজার টাকার বিক্রি হলে এখন ৩ হাজার টাকারও বিক্রি নেই।
অন্য একটি খাবার দোকানের মালিক মহম্মদ ইমরানের কথায়, ‘‘ভাগাড়-কাণ্ডের পর থেকেই খদ্দের কমছে। অনেকেই শুধু আলু আর ডিম দিয়ে বিরিয়ানি দিতে বলছেন।’’ ওই ব্যবসায়ীর বক্তব্য, রোজ ২০ কেজি চালের বিরিয়ানি করতেন, এখন তা অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে। দেড় কেজি মাংসের চাপ বিক্রিই কঠিন হয়ে পড়েছে। টাউন ক্লাব রোডের রেস্তোরাঁর মালিক দীপক বসাক, প্রদীপ ঘোষেরা জানালেন, নিয়মিত খদ্দেররা আসছেন, তাই রক্ষে।
এ দিন এনএস রোডের কয়েকটি হোটেলে অভিযান চালায় পুরসভা। তবে পুরসভার অভিযান হবে আগাম খবর পেয়ে অনেক ব্যবসায়ী সতর্ক থাকছেন বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের দাবি, দুপুরের বদলে সকালে রান্নার সময়ে অভিযান করা দরকার।