বানভাসি মালদা। ছবি: সংগৃহীত
গঙ্গা, মহানন্দা এবং ফুলহার। মালদহের প্রধান এই তিনটি নদীর জলস্তর নামতে শুরু করায় ঘরে ফেরার দিন গুনতে শুরু করে দিয়েছিলেন বানভাসি লক্ষাধিক পরিবার। তবে রবিবার সকাল থেকে তাঁদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে বৃষ্টি।
এ দিন সকাল থেকেই লাগাতার বৃষ্টি হয়েছে জেলা জুড়েই। ফলে নতুন করে নদী গুলির জল বাড়ার আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছেন বানভাসিরা। যদিও গত, চার দিন ধরে জেলার নদী গুলির জলস্তর নতুন করে বাড়েনি বলে দাবি করেছেন সেচ দফতরের কর্তারা। তাঁদের দাবি, মালদহে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে।
গত, ১৫ অগস্ট থেকে গঙ্গা, ফুলহার এবং মহানন্দা বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। যার ফলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে মালদহ জেলার ১৪টি ব্লকের প্রায় শতাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে। এমনকী, ৩৪ এবং ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশের উপর দিয়ে বইছে নদী। জাতীয় সড়ক গুলি নদীর রূপ নিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার, পুরাতন মালদহ, হবিবপুর, বামনগোলা, গাজল, মানিকচক সহ চাঁচল মহাকুমার ছ’টি ব্লকের প্রায় দশ লক্ষ মানুষ বানভাসি। বানভাসিদের জন্য জেলা জুড়ে ১৬০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এ ছাড়া বানভাসিদের মধ্যে অনেকে রেললাইন কিংবা জাতীয় ও রাজ্য সড়কের ধারে ত্রিপলের ছাউনি তৈরি করে বসবাস করছেন। প্রশাসনের কাছ থেকে পর্যাপ্ত ত্রিপলও মেলেনি বলে দাবি বানভাসীদের।
ফলে একটি ত্রিপলের নীচে একাধিক পরিবারকে কাটাতে হচ্ছে। পানীয় জল, খাওয়ার নিয়েও বিস্তর ক্ষোভ রয়েছে বানভাসীদের মধ্যে। তবে গত, তিন দিন ধরে নদী গুলির জলস্থর নামতে শুরু করায় ঘরে ফেরার দিন গুনতে শুরু করে দিয়েছিলেন বহু পরিবার।
পুরাতন মালদহের সারদা কলোনির বাসিন্দা সমীর সরকার, লক্ষ্মী দাস প্রমুখেরা বলেন, ‘‘রেল লাইনের ধারে পরিবার নিয়ে ত্রিপলের নীচে কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছি। আর ঘর থেকে জল নামছে কি না, তা গিয়ে দিনে একবার করে দেখে আসছি। এখন ঘর থেকে জল বারান্দায় রয়েছে।’’ তাঁরা বলেন, ‘‘বৃষ্টি নেই দেখে ভাবছিলাম সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ঘরে ফিরতে পারব। তবে এ দিন ফের বৃষ্টি হওয়ায় নতুন করে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।’’
মহানন্দা ২৩.২৩ মিটার, গঙ্গা ২৪.৩১ মিটার এবং ফুলহার ২৬.৬৪ মিটার উচ্চতায় বইছে। তিনটি নদীর জলই স্থির রয়েছে। এখনই নতুন করে জল বাড়ার সম্ভাবনাও নেই। জেলা শাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। বানভাসিদের সব রকম সাহায্য করার চেষ্টা চলছে।