সায়েশা বন্দ্যোপাধ্যায়
মেয়ের চিকিৎসায় চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ তুলে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন শিলিগুড়ির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শৌমিক বন্দ্যোপাধ্যায়। ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে প্রথমে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোম ভর্তি করা হয় সায়েশাকে। তারপর সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শেই কলকাতায় এনে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় সায়েশাকে। তারপরে গত রবিবার মারা যায় সাত বছরের সায়েশা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাটিগাড়ার কাছে ওই নার্সিংহোম এবং সেখানে কর্মরত চিকিৎসক প্রিন্স পারেখের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন শৌমিকবাবু।
শৌমিকবাবুর কথায়, ‘‘এখানে মেয়ের কোনও চিকিৎসাই হয়নি। তারপর কলকাতায় যেখানে রেফার করা হল, সেখানেও চূড়ান্ত গাফিলতির জেরে মেয়েকে মেরে ফেলা হল।’’ গত বুধবার থেকে জ্বর নিয়ে শিলিগুড়ির কাছে মাটিগাড়ায় ওই নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিল সায়েশা। প্রথমে ডাক্তাররা সেরকম আমল না দিলেও পরে তাকে হঠাৎই কলকাতায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে পরিবারের দাবি।
মেয়েটির বাবার দাবি, শিলিগুড়িতে চিকিৎসার সময় কোনও রক্তপরীক্ষাই হয়নি। কিন্তু ওই নার্সিংহোমেরই কলকাতার শাখায় পাঠানোর পরে মেয়েটির রক্ত পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু সেই রিপোর্ট সময়ে আসেনি বলে অভিযোগ শৌমিকবাবুর। পরে সায়েশার অবস্থা ক্রমাগত খারাপ হতে থাকলেও হাসপাতাল এবং ডাক্তাররা যত্ন নেয়নি বলে অভিযোগ। তার জন্য কলকাতার ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কলকাতায় নিউটাউন থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন শৌমিকবাবু। এ বার শিলিগুড়ির ওই ডাক্তার এবং নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি। শৌমিকবাবুর কথায়, ‘‘পারেখ আমার ছোটবেলার বন্ধু। সেই আমার মেয়ের রোগ নিয়ে যেভাবে অবহেলা, বিভ্রান্ত করল, যে মেয়েটাকে আর ফেরাতে পারলাম না।’’
বুধবার শৌমিকবাবুকে সমবেদনা জানাতে হাজির হয়েছিলেন তার পারিবারিক বন্ধু তথা বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী। তার কথায়, ‘‘বড় বড় নার্সিংহোমে মানুষ ভাল চিকিৎসা পেতে যায়। সেখানে এরকম অবহেলা হলে তা মানা যাবে না।’’ অভিযুক্ত চিকিৎসককে ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন তোলেননি এসএমএস করেও জবাব পাওয়া যায়নি।