উদাসীন স্কুল কর্তৃপক্ষ, অভিযোগ

ভিন্‌ রাজ্য, এমনকী বাংলাদেশ থেকেও এই স্কুলে পড়ুয়াদের ভর্তি করানো হয়। কর্তৃপক্ষ জানান, ৪০০ জন পড়ুয়া রয়েছে। হস্টেলে রয়েছে অন্তত ১৫০ জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০৪:৩১
Share:

দুশ্চিন্তা: জখম ঋত্বিক কুমার সিংহ। পাশে মা। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের তিন তলার ক্লাসরুম থেকে জানলা দিয়ে পড়ে মৃত্যু হয়েছে একটি ছাত্রের। অন্য একজন জখম। অথচ স্কুল কর্তৃপক্ষের ঘটনাটি প্রকাশ্যে না আনার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ। ফুলবাড়ির ওই ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল কর্তৃপক্ষের একনায়কতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, স্কুলের ভিতরের পরিস্থিতি দেখতে পারেন না অভিভাবকেরা। অভিভাবকদের ডাকলেও পড়ুয়াদের পারফরম্যান্স দিয়েই তখন কথা বলেন কর্তৃপক্ষ। অন্য কথা বললেও তা শোনা হয় না বলে অভিযোগ। ঘটনার পর স্কুলের গেট আটকে অভিভাবকদের কাউকে বা সংবাদ মাধ্যমকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

Advertisement

ঘটনার পর নার্সিংহোমে যান পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এবং জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের শিক্ষা এবং ক্রীড়া বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ দেবাশিস প্রামাণিক। পর্যটনমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে স্কুলটি। তিনি বলেন, ‘‘জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলব। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’ দেবাশিস বলেন, ‘‘ঘটনার পিছনে স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি স্পষ্ট।’’ নানা ক্ষেত্রে স্কুলে খামতি রয়েছে শুরু থেকেই। অভিযোগ, অভিভাবকদের অন্ধকারে রেখে দশম শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তি করা হলেও স্কুলের অনুমোদন রয়েছে নবম শ্রেণি পর্যন্ত। ছাত্রদের রায়গঞ্জের একটি কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানোর হয়। ভিন্‌রাজ্যে এই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সুনাম রয়েছে। এখানে স্কুলের ব্র্যান্ডকে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞাপনের ঘটা করে মোটা টাকা নিয়ে পড়ুয়াদের ভর্তি করানো হয় বলে অভিযোগ। অধ্যক্ষ রজনী প্রসাদ বলেন, ‘‘স্কুলের অনুমোদন নবম শ্রেণি পর্যন্ত। দশমশ্রেণির অনুমোদন পেতে আবেদন করতে হবে। নিয়ম মেনেই স্কুল চলে।’’

এদিনের ঘটনা এবং পরিস্থিতি নিয়ে জেলাশাসককে চিঠি দেবে শিলিগুড়ি অভিভাবক মঞ্চ। আন্দোলনে নামার কথাও জানায় তাঁরা। ঘটনার পর অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক সন্দীপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মহকুমা প্রশাসনের তরফে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষকে ঘটনার জন্য শোকজ করা হোক।’’ তাঁদের অভিযোগ, গ্রিল নেই জানলায়। সিবিএসই কর্তৃপক্ষ যখন আসে তাঁরা দেখবেন তো? জানলায় গ্রিল না থাকলে সেখানে কেন ক্লাস হচ্ছিল সেই প্রশ্ন তুলেছেন। গ্রিলে মেরামতি না হওয়া পর্যন্ত প্লাইবোর্ড বা কিছু দিয়ে কেন ঢেকে দেওয়া হল না সেই প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকেরা।

Advertisement

ভিন্‌ রাজ্য, এমনকী বাংলাদেশ থেকেও এই স্কুলে পড়ুয়াদের ভর্তি করানো হয়। কর্তৃপক্ষ জানান, ৪০০ জন পড়ুয়া রয়েছে। হস্টেলে রয়েছে অন্তত ১৫০ জন। অভিভাবক আবুতাহের বলেন, ‘‘খেতে বসেছিলাম। ঘটনার খবর পেয়েই চলে আসি। বাংলাদেশে থাকা অনেক অভিভাবক উদ্বিগ্ন। তাঁরা বারবার ফোন করে জানতে চাইছেন।’’ ভিন্‌ রাজ্য থেকে এই স্কুলে পড়তে আসা নবমশ্রেণির এক ছাত্রের স্থানীয় অভিভাবক মনোজ কুমার দাস বলেন, ‘‘খুবই উদ্বেগে রয়েছি। ক্লাসে অনেক দিন ধরেই জানলায় গ্রিল ছিল না। কর্তৃপক্ষ সেদিকে নজর দেয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন