বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের অভিযোগে পদ খোয়াতে হয়েছিল উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান বেঞ্জামিন হেমব্রমকে। তারপরে দায়িত্ব এসেই সব নেতা-কর্মীকে নিয়ে একসঙ্গে চলার কথা ঘোষণা করলেন নতুন চেয়ারম্যান মহম্মদ জাহিদ আলম আরজু।
গোয়ালপোখরের বিধায়ক, রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানির ঘনিষ্ঠ মহম্মদ জাহিদকে গত ৯ অক্টোবর রাজ্য শিক্ষা দফতর সংসদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়। সোমবার তিনি রায়গঞ্জেসংসদের কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন।
তাঁকে সরকারিভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক মৃন্ময় ঘোষ। এ দিন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েই ইসলামপুরের পাটাগোড়া হাইস্কুলের ইংরেজির শিক্ষক জাহিদ বলেন, ‘‘অতীতের কী হয়েছে সবই জানি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়াতে চাই না। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলে এখন থেকে দলের কাজে সব নেতা কর্মীকে নিয়ে একসঙ্গে চলব।’’ গোলাম রব্বানির দাবি, রাজ্য সরকার উপযুক্ত মনে করেছে বলেই মহম্মদ জাহিদকে চেয়ারম্যানের পদে বসিয়েছে।
তবে দল সূত্রে খবর, জাহিদের চেষ্টাতেই ২৮ সেপ্টেম্বর গোয়ালপোখর-২ ব্লকের কংগ্রেস পরিচালিত পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিরোধী সদস্যরা শাসকদলে যোগ দিয়েছেন। ফলে পাঁচটি পঞ্চায়েত বর্তমানে তৃণমূলের দখলে। তাঁর ভূমিকায় খুশি হয়ে মন্ত্রীর সুপারিশেই দলের রাজ্য নেতৃত্ব তাঁকে চেয়ারম্যানের পদে বসিয়েছে।
অন্যদিকে, মহম্মদ জাহিদ চেয়ারম্যানের পদে বসতেই গোলাম রব্বানির বিরোধী বলে পরিচিত জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্যের অনুগামীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, বেঞ্জামিন হেমব্রম অপসারিত হওয়ার পর অমলবাবু দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে সংসদের পরবর্তী চেয়ারম্যান পদে তাঁর একাধিক অনুগামী শিক্ষকের নামের তালিকা পাঠিয়েছিলেন। দল সেই তালিকা বাতিল করে দেওয়ায় হতাশ অমলবাবু। তিনি বলেন, ‘‘দলের অনেক সক্রিয় শিক্ষকই আশা করেছিলেন চেয়ারম্যান হওয়ার। যাইহোক, সরকারি নির্দেশ সবাইকেই মানতে হবে।’’ বেঞ্জামিনবাবুর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কোথাও অভিযোগ করেছিলেন বলে জানা নেই। রাজ্য সরকার তাঁকে উপযুক্ত মনে করেনি বলেই চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেয়।