প্লাস্টিক বর্জনে ছাড় ভর্তির ফি

মালদহ জেলার ইংরেজবাজার ব্লকের এই স্কুলের উদ্যোগে পড়াশোনার পাশাপাশি বছরভর নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয় পড়ুয়ারা। এবার স্কুলকে একেবারে প্লাস্টিকমুক্ত করতে উদ্যোগী হলেন কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৯ ০২:১৩
Share:

উদ্যোগ: স্কুলে প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে তৈরি গ্রিন হাউস। নিজস্ব চিত্র

না ‘স্বচ্ছ ভারত’, না ‘নির্মল বাংলা’। কোনও সরকারি প্রকল্পের বাধ্যতামূলক প্রচারের জেরে নয়, নিজেদের পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে অভিনব পন্থা নিলেন মালদহের শোভানগর হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। আজ, বুধবার বিশ্ব পরিবেশ দিবস। সেই উপলক্ষে স্কুলের ঘোষণা, গ্রামে ছড়িয়ে থাকা প্লাস্টিকজাত বর্জ্য স্কুলে জমা দিলে ভর্তির ফি-তে মিলবে ছাড়! একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে এই নিয়ম চালু করছে স্কুল।

Advertisement

মালদহ জেলার ইংরেজবাজার ব্লকের এই স্কুলের উদ্যোগে পড়াশোনার পাশাপাশি বছরভর নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয় পড়ুয়ারা। এবার স্কুলকে একেবারে প্লাস্টিকমুক্ত করতে উদ্যোগী হলেন কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে স্কুল সংলগ্ন গ্রামগুলিকেও প্লাস্টিকমুক্ত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ তাঁরা। স্কুল সূত্রে খবর, নিচু ক্লাসের পড়ুয়াদের নিয়ে গঠিত যে শিশু সংসদ রয়েছে, সেই সংসদের সভাতেই এমন অভিনব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এমনকি, এজন্য এবার স্কুলের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে ছাড়েরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ফর্ম দেওয়া চলবে ৮ জুন পর্যন্ত। ১২ তারিখ ভর্তির তালিকা প্রকাশিত হবে। তার পরেই ভর্তি। কোনও ছাত্রছাত্রী ভর্তির সময় যদি বাড়ি বা এলাকার প্লাস্টিকজাত বর্জ্য এনে স্কুলে জমা দেয়, তবে তার ভর্তির ফি-তে ছাড় দেওয়া হবে। স্কুলের নোটিস বোর্ডে সেই বার্তা ঝুলিয়েও দেওয়া হয়েছে। স্কুল সূত্রে আরও খবর, এরপর পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতেও এই ব্যবস্থা চালু হবে। পাশাপাশি, এখন থেকে বছরভর পড়ুয়াদের কাছ থেকে প্লাস্টিকজাত বর্জ্য নির্দিষ্ট দিনে সংগ্রহ করবে স্কুল। সেই বর্জ্য রিসাইক্লিংয়ের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় পাঠানো হবে মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রিসাইক্লিং প্ল্যান্টে।

এদিকে, বিভিন্ন কোল্ড ড্রিঙ্কস ও পানীয় জলের খালি বোতলও সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে স্কুলের তরফে। সেই বোতলগুলি মাপমতো কেটে স্কুলবাড়ির ছাদে লাগানো হয়েছে বাহারি ফুলের গাছ। এমনকি, ওই বোতলগুলিতে একশো থেকে দেড়শো প্লাস্টিক ক্যারিবাগ ভরে পরিবেশ-বান্ধব ইট তৈরি করা হচ্ছে। তা দিয়ে কমিউনিটি টয়লেট ও গ্রিনহাউস তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিস্বামী দাস বলেন, ‘‘আমরা চাই স্কুলের পাশাপাশি চারপাশের পরিবেশ প্লাস্টিকমুক্ত হোক। পড়ুয়াদের সহযোগিতা নিয়ে ধীরে ধীরে সেই লক্ষ্যে আমরা পৌঁছতে চাই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই উদ্যোগ সাফল্য পেতেই ভর্তির ফি-তে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এতে পড়ুয়াদের মধ্যে একটা উৎসাহ যেমন আসবে, তেমনি আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়ারাও উপকৃত হবে।’’ স্কুলের এই উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর ও প্রশাসনও। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ( মাধ্যমিক) তাপস বিশ্বাস বলেন, ‘‘খুব ভাল উদ্যোগ।’’ জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দারুণ উদ্যোগ। স্কুল চাইলে আমরা এই কাজে সহযোগিতা করতে পারি।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement