ঢিলেঢালা নিরাপত্তায় তুঙ্গে ক্ষোভ

ভুক্তভোগীরা জানান, হাসপাতালের মধ্যে সারাদিনের জন্য স্কুটার, বাইক, গাড়ি পার্কিং করে চলে যান অনেকে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভবঘুরেদের অবাধ যাতায়াত কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১২
Share:

শোকার্ত: সন্তান চুরি যাওয়ায় ভেঙে পড়েছেন দম্পতি। নিজস্ব চিত্র।

বহির্বিভাগে রোগী ছাড়াও দিনভর ভবঘুরে, দালালদের আনাগোনা চললেও কর্তৃপক্ষ উদাসীন বলে আগেও বহুবার অভিযোগ উঠেছে। শিশু চুরির ঘটনা সেই অভিযোগকেই আরও জোরদার করল বলে মনে করছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। ভুক্তভোগীরা জানান, হাসপাতালের মধ্যে সারাদিনের জন্য স্কুটার, বাইক, গাড়ি পার্কিং করে চলে যান অনেকে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভবঘুরেদের অবাধ যাতায়াত কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালে বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীরা কেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের ছাড়া অন্যদের দীর্ঘ সময় ভেতরে থাকতে দেন তা নিয়েও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। দার্জিলিঙের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, হাসপাতাল চত্বরে ও বিভিন্ন ওয়ার্ড, সিসিটিভি থাকলেও তা দিয়ে ঠিকঠাক নজরদারি হয় না। এ দিন সিসিটিভি ফুটেজে অভিযুক্ত মহিলাকে দেখা গেলেও শক্তিশালী সিসিটিভি না হওয়ায় মুখ স্পষ্ট ছিল না। তেমনিই, হাসপাতালের মূল গেটের কাছে কোনও নজরদারি ক্যামেরাও নেই। তাতে কে ঢুকছেন কে বার হচ্ছেন তা দেখারও উপায় নেই। গেটের পাশেই পুলিশ ক্যাম্পে রাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তা শুধুমাত্র থাকার জায়গা। ফাঁড়ির মতো সামনে ২৪ ঘণ্টা নজরদারিরও কোনও ব্যবস্থা নেই। ২০০৫-এ এই হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে শিশু চুরির ঘটনা ঘটেছিল।

এই প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলব। রাতে থানাকেও নজরদারি বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে।’’ কমিশনারেট সূত্রের খবর, এ দিন রাত থেকে বিশেষ টিম গড়ে ৪টি পুলিশ ভ্যান শহরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে। আজ, বুধবার অভিযুক্তর স্কেচ তৈরি করানো হবে।

Advertisement

হাসপাতালের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী কিছু রয়েছে। তবে ওয়ার্ডে কার্ড ছাড়াই লোকজন ঢোকে। হাসপাতাল চত্বরে কয়েকটি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা থাকলেও গেট দিয়ে কে ঢুকছে, বার হচ্ছে তা চিহ্নিত করতে কোনও সিসিক্যামেরা নেই। এমনকী সিসিক্যামেরার ফুটেজ নিয়মিত দেখা হয় না বা নজরদারি করা হয় না বলে হাসপাতালের একটি সূত্রই জানিয়েছে। এ দিন ঘটনার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বাইরে ঘটেছে বলে নিজেদের উপর থেকে দায় এড়াতে সচেষ্ট ছিল বলে অভিযোগ।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে ১৬ টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা রয়েছে নজরদারির জন্য। তার মধ্যে জরুরি বিভাগে ভিতরে এবং বাইরে রয়েছে দুটি ক্যামেরা। হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল অবশ্য জানান, নিরাপত্তার বিষয়টি সব সময়েই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। খামতি থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের পরিচয় পত্র বা নির্দিষ্ট পোশাক না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা হয়। কে বাইরের কে হাসপাতালের কর্মী সাধারণের পক্ষে তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। এর আগেও হাসপাতালের এক্সরে করাতে এসে স্বাস্থ্য কর্মী পরিচয় দিয়ে এক মহিলার টাকা নিয়ে চম্পট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন