—ফাইল চিত্র।
রেলের বিদ্যুদয়নের কাজ সময়ে শেষ করতে পারেননি ইঞ্জিনিয়াররা। তাই ফের নতুন করে ট্রেন বাতিলের মেয়াদ বাড়াল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। রেল কর্তৃপক্ষ নোটিস দিয়ে জানিয়েছেন, আগামী ২৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হল ট্রেন বাতিলের মেয়াদ। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়বে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এর আগে একবার দীর্ঘ সময় ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু ১৬ মে-র পর আর সমস্যা হবে না বলে দাবি করেছিল রেল। তার পরেও কাজ বন্ধ থাকার যুক্তি দেখিয়ে ফের মেয়াদ বাড়ানো হল ট্রেন বাতিলের।
রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, ১৯ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে বালুরঘাট-শিলিগুড়ি ডেমু, হলদিবাড়ি-কলকাতা এসএফ এক্সপ্রেস ২৬ মে পর্যন্ত বাতিল রয়েছে। ১৯ এবং ২৩ মে কামাক্ষ্যা-পুরী এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়েছে। ফলে উল্টো দিকে বাতিল হয়েছে ২১ ও ২৫ মে-র পুরী- কামাক্ষ্যা এক্সপ্রেস। উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস ২৫ মে পর্যন্ত, সিকিম মহানন্দা-এক্সপ্রেস আগামী ২৭ মে পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে।
রেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এ ছাড়াও, এনজেপি-নয়াদিল্লি এসএফ এক্সপ্রেস, কাঞ্চনজঙ্ঘা, শিয়ালদহ-আগরতলা এক্সপ্রেস সপ্তাহে চালানোর দিন কমছে আগামী ২৪ মে পর্যন্ত। তা ছাড়াও, ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস, কামাক্ষ্যা-কাটিহারের মতো ট্রেনগুলির দূরত্ব কমামো হচ্ছে ওই সময় পর্যন্ত। রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা বলেন, ‘‘আমরা আশা করেছিলাম, ১৬ মে-র মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। তবে আরও কিছু দিন অসুবিধা চলতে পারে মানুষের। আমরা দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’’
উত্তরবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্বের সঙ্গে রেল যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটেছিল ২০১৭ সালেও। সে বারে বন্যায় সেতু ভেঙে গিয়ে প্রায় চার মাস যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। সাধারণ যাত্রীদের কথায়, সেটা ছিল প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এ বারে তো তা নয়। বিদ্যুদয়নের কাজে এত দেরি হচ্ছে কেন, প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, আলুয়াবাড়ি থেকে এনজেপি পর্যন্ত ট্রেন লাইনের বিদ্যুদয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে। এই সময় খুঁটির উপর দিয়ে ইলেকট্রিক তার টানার কাজ চলছে। তাই কয়েক দিনের জন্য কিছু ট্রেন বাতিল করতে হচ্ছে। তাঁরা মেনে নিয়েছেন, যে সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল, তা করা যায়নি। রেল সূত্রে এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে যে, বাতিলের মেয়াদ ২৫ মে-র পরেও বাড়তে পারে।
দীর্ঘদিন থেকে ট্রেন বাতিলের জেরে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ যাত্রীদের। প্রতি সপ্তাহে শিলিগুড়ি থেকে বালুরঘাটে মাল নিয়ে যান ব্যবসায়ী সমীর মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘দীর্ঘদিন থেকে এমন ভাবে ট্রেন বন্ধের ফলে ব্যবসা লাটে উঠছে।’’ কম দূরত্বের ট্রেনগুলির উপর মানুষের রোজকার জীবিকা নির্ভর করে। মার খেয়ে গিয়েছে সেগুলিও। কেন সময়ে কাজ শেষ করে উঠতে পারছেন না রেল কর্তৃপক্ষ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিলিগুড়ির ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি। বিধানমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তা বাপি সাহা বলেন, ‘‘ট্রেন বন্ধ হলে মানুষের ভোগান্তি বাড়ে। যাত্রী ছাড়াও স্থানীয় কয়েকটি বাজারের খুচরো ব্যবসার মাধ্যম তো রেলই।’’