ধৃত অমর কুমার (উপরে)। উদ্ধার হওয়া বন্দুক। নিজস্ব চিত্র
ধাবার সামনে শূন্যে গুলি চালিয়ে লোকজনকে ভয় দেখানোর অভিযোগে বিহারের চার যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করল। ধৃতদের হেফাজত থেকে একটি দোনলা বন্দুক, ছয় রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। আটক করা হয়েছে বিহারের নম্বরের একটি গাড়িও। বৃহস্পতিবার রাতে শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাইকারি বাজার এলাকার ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা গাড়িটিতে বিহারের পূর্ণিয়া থেকে শিলিগুড়ি এসেছিলেন। দু’টি পানশালায় খানাপিনার পর ফের জাতীয় সড়কের ধারের ধাবায় গিয়ে বসেন। সেখানে রুটি-মাংস খেয়ে সামনের পানের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ঘটনাটি ঘটান। পুলিশের দাবি, নিজেদের ‘দাদা’ হিসাবে জাহির করতে অভিযুক্তরা গুলি চালায়।
ধৃতদের নাম অমর কুমার, কার্তিক কুমার, জিয়াউল হক এবং অশ্বিনী রায়। সকলের বাড়িই পূর্ণিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। অভিযুক্তদের মধ্যে অমর কুমার বিহারের স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত বলে দাবি করেছেন। সকলেই জমিজমা, বহুতল, পরিবহণ-সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করেন। অমরই দলটির মাথা। অশ্বিনী তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী। এই অশ্বিনীই শূন্যে এক রাউন্ড গুলি চালিয়েছেন। বন্দুকটির লাইসেন্স রয়েছে বললেও তা অবশ্য অভিযুক্তরা গ্রেফতারের সময় দেখাতে পারেননি। অভিযুক্তদের এদিন দুপুরে শিলিগুড়ি আদালতে তুলে জেল হেফাজতে পাঠান হয়েছে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা কী উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শহরে ঘুরছিল, দেখা হচ্ছে। বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। পূর্ণিয়া বা অন্য কোথায় এদের নামে পুরোনো মামলা রয়েছে কি না তা-ও খোঁজ করা হচ্ছে।’’
গত ১ এপ্রিল, ২০১৬ সাল থেকে বিহারে মদ নিষিদ্ধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। শুধু সেনা বাহিনীর ক্যান্টিনের জন্য ওই লাইসেন্স জারি রয়েছে। এরপর থেকেই বিহার লাগোয়া দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়িতে দুপুর থেকে গাড়ি নিয়ে এসে পানশালায় যাতায়াতের চল শুরু হয়। কিসনগঞ্জ, পূর্ণিয়া, গলগলিয়া, ঠাকুরগঞ্জের মতো এলাকাগুলো থেকে লোকজন নিয়মিত আসেন। গাড়িতে গভীর রাতে বা পরের দিন ফিরে যান। বিহারের প্রান্তের লোকজনের আনাগোনা শুরু হতেই পানশালায় মারপিট, রিভলবার উঁচিয়ে হুমকি’র মত ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।
রাত ১২.৩০ পর হিলকার্ট রোড, শালুগাড়া ঘুরে পাইকারি বাজারের সামনে একটি ধাবায় এসে বসেন। ধাবার দুইজন কর্মী জানান, সকলেই অল্পবিস্তর মদ্যপ ছিলেন। জোরে জোরে কথাবার্তা বলছিলেন। এক সময় রাস্তার সামনে পানের দোকানে সামনে যান। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরছেন কেন জিজ্ঞাসা করতেই শূন্যে গুলি চালান। আরও গুলি চালিয়ে দেখাবেন কি না, জানতে চান। ভয়ে ধাবায় থাকায় বিভিন্ন গাড়ির চালক, খালাসি ও লোকজন পালিয়ে যায়।
গুলি আওয়াজে পুলিশ খোঁজখবর শুরু করে। প্রধাননগরের আইসি মনোজিৎ সরকার পুলিশ গিয়ে এলাকায় পৌঁছন। অভিযুক্তরা তখন গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। অভিযুক্তদের দাবি, ‘‘ভূলবশত বন্দুক থেকে গুলি বেরিয়ে গিয়েছে। কাউকে ভয় দেখানো হয়নি।’’