—প্রতীকী চিত্র।
গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা দাপট ছিলই, রবিবার থেকে দোসর জুড়েছে বঙ্গোপসাগরের প্রবল বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত। এর জেরেই সোমবার বিকেল থেকে পাহাড় সংলগ্ন সমতলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কিছু ক্ষণ পরপর বাজ পড়ে তীব্র আওয়াজে বিভিন্ন এলাকা কেঁপে ওঠে। বিশেষ করে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, ইসলামপুর ছাড়া ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় জোর বৃষ্টি হয়।
দার্জিলিং পাহাড়, সিকিমের মতো ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ি, লাটাগুড়িতেও ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এ দিন ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন। বিকাল ৩টেয় পরীক্ষা শেষের পর পরীক্ষার্থীদের বাড়ি ফেরার সময় এই অঞ্চলের অনেকেই বৃষ্টির জেরে সমস্যায় পড়েন। বিশেষ করে সকাল থেকে ঝকঝকে আকাশ থাকায় পাহাড় লাগোয়া সমতলের গ্রামীণ এলাকার ছেলেমেয়েরা প্রস্তুতি ছাড়াও পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল। অনেককেই ভিজে বাড়ি ঢুকতে হয়।
আবহাওয়াবিদেরা জানান, আগামী ৪৮ ঘন্টায় পাহাড় এবং সংলগ্ন এলাকায় ঝড়-বৃষ্টির দাপট কমলেও আবহাওয়ার খুব একটা পরিবর্তন হবে না। সন্ধ্যা নাগাদ ইসলামপুর, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারেও হালকা বৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘প্রতিদিন দুপুরের পর থেকেই পরিস্থিতির বদল হচ্ছে। পাহাড়ে বৃষ্টি কম হলেও সম্ভাবনা রয়েছে।’’
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিহারের দিক থেকে উত্তর দক্ষিণে ক’দিন আগেই ঢুকেছিল। এ বার বঙ্গোপসাগরের উপর বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত বিপুল পরিমাণে জলীয় বাস্প নিয়ে হাজির হওয়ায় এই অঞ্চলে আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তন হয়েছে। ঝড়, বৃষ্টি ও বজ্রপাত চলবে। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে আবহাওয়া ক্রমশ গরম হওয়ায় রাতের দিকেও গরম পোশাক পড়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন বাসিন্দারা। রবিবার রাত থেকে তা আবার বাসিন্দাদের পড়তে হচ্ছে। এ দিন সন্ধ্যায় চাদর, জ্যাকেট পড়েও লোকজনকে ছাতা মাথায় দিতে শিলিগুড়ির রাস্তায় দেখা দিয়েছে।
মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর বা উত্তর দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় অবশ্য এখনও বৃষ্টি হয়নি। কোচবিহারে রাতে আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়। গরমের থেকে কিছুটা রেহাই পেতে বাসিন্দারা কখন বৃষ্টি আসবে, তা নিয়ে আলোচনাও শুরু করেন। পাশের জেলা আলিপুরদুয়ারে কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়ে থেমে যায়। মালবাজারে দুপুরে ঝড়-বৃষ্টি হয়। জলপাইগুড়িতে রাতে ঝোড়ো হাওয়া, বৃষ্টি শুরু হতেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়।
শিলিগুড়ি শহরে বিকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় লোডশেডিং হয়। ঝড় থামতেই বিদ্যুৎ ফেরে। সন্ধ্যার পর বাজারঘাটও সুনসান। দুর্যোগ চলতে থাকলে কী হবে, তা নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা চিন্তায় পড়েছেন।