পাশাপাশি: অশোক-জীবেশের সঙ্গে আলোচনায় ইয়েচুরি। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
এত দিন অশোক ভট্টাচার্যের গলায় শোনা যেত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার সুর। শুক্রবার এখানে বাঘাযতীন পার্কের জনসভায় একই কথা বললেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও।
শিলিগুড়ি পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদ বামেদের হাতে। ২০১৫ সালে তৃণমূলকে হারিয়ে দুইয়ের দখল নিজেদের কাছে রাখে বামেরা। তার পরে ২০১৬ সালে শিলিগুড়ি থেকে জিতে আবার বিধায়ক হন অশোক ভট্টাচার্য। কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের সমঝোতা হওয়ায় দার্জিলিং জেলায় সমতলেও একটিও আসন জিততে পারেনি তৃণমূল।
তার পর থেকেই বঞ্চনার পরিমাণ বেড়েছে, অভিযোগ করেন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক। এ দিন সেই একই সুরে সীতারাম বলেন, ‘‘এখানে বদলার, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়েছে। উন্নয়নের কাজে পুরসভা, পরিষদকে সাহায্য করা হচ্ছে না। অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। শিলিগুড়ির উন্নয়নকে থমকে দেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি বলেন, কলকাতার পর শিলিগুড়ি রাজ্যের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর। উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম বড় শহর। কিন্তু এখানে নির্বাচনে বারবার চেষ্টা করেও তৃণমূলকে হার মানতে হয়েছে। তাই রাজনৈতিক ভাবে বদলা নেওয়া হচ্ছে।
বস্তুত, অশোকবাবুর বঞ্চনার অভিযোগ এর আগে সিপিএমের রাজ্য নেতাদের মুখেও শোনা গিয়েছিল। সূর্যকান্ত মিশ্র থেকে শুরু করে রাজ্যের অনেক নেতাই এই কথা বলেছেন। এ দিন তাতেই সিলমোহর দিলেন সীতারাম। বামেদের অভিযোগ, প্রাপ্য টাকা তো দেওয়াই হয়নি। উপরন্তু বিভিন্ন প্রকল্পের টাকাও আটকে রাখা হয়েছে। এই নিয়ে অশোক মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও পাঠিয়েছেন। এই সব কথা মনে করিয়ে দিয়ে অশোক এ দিনের সভায় বলেন, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চলছে। এখানকার মানুষকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ২০ বছর আমি রাজ্যের মন্ত্রী ছিলাম, কোনও দিন এসব হয়নি। বিরোধীদেরও আমরা যোগ্য মর্যাদা দিতাম।’’
যদিও তৃণমূল সম্প্রতি শ্বেতপত্র প্রকাশ করে দাবি করেছে, শিলিগুড়ির সঙ্গে কোনওরকম বঞ্চনা হচ্ছে না। দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়ে দিয়েছেন, সব সরকারি তথ্য সামনে রয়েছে। প্রয়োজনে অশোকবাবু সুপ্রিম কোর্টে পর্যন্ত যেতে পারেন।