একমাত্র দিদির বিয়ে। আনন্দে মশগুল ছিল ভাই। কিন্তু তার মাঝেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বন্ধ হয়ে গেল বিয়ের অনুষ্ঠান। বিয়ের আগের দিন বাড়ির পাশে মহানন্দা নদীতে স্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হল ছোট ভাইয়ের। মঙ্গলবার ইংরেজবাজার শহরের গয়েশপুর কালীবাড়ি এলাকার এই ঘটনা মহল্লায় শোকের ছায়া।
মৃত রাহুল শেখ (১৬) মালদহ রেলওয়ে হাই স্কুলে নবম শ্রেণির ছাত্র।
ইংরেজবাজার শহরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে মহানন্দা নদীর ধারে বাড়ি পেশায় দিনমজুর সুকুর শেখ ও তাঁর স্ত্রী গোলেনুর বিবির। তাঁদের পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে। রাহুল ছেলেমেয়েদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। সুকুর শেখের একমাত্র মেয়ে রুকসানা খাতুনের বিয়ে ছিল আজ বুধবার। পাত্র ইংরেজবাজার ব্লকের কুমারপুর গ্রামের। বিয়ে উপলক্ষে বাড়ির একফালি উঠোনে প্যান্ডেলও তৈরি হয়েছে। সোমবার থেকেই বাড়িতে আত্মীয়দের ভিড় জমেছিল।
বছর বারোর খুড়তুতো ভাই আজমুলকে নিয়ে এ দিন দুপুরে বাড়ির পিছনেই মহানন্দা নদীর কালীবাড়ি ঘাটে স্নান করতে গিয়েছিল রাহুল। দু’জনেই সাঁতার জানত না। জানা গিয়েছে, জলে নামতেই আজমুল হাবুডুবু খেয়ে অনেকটা দূর চলে যায়। সাঁতার না জানলেও ভাইকে বাঁচাতে রাহুলও ঝাঁপ দেয় জলে। দু’জনকেই ডুবতে দেখে ঘাটে থাকা আরও কিছু কিশোর-কিশোরী চিত্কার জুড়ে দেয়। তা দেখে নদীর ওপারে থাকা এক মাঝি নৌকা নিয়ে এসে আজমুলকে জল থেকে তুলতে পারলেও তলিয়ে যায় রাহুল। প্রায় আধঘণ্টা পর জাল ফেলে রাহুলকে তোলা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। মর্মান্তিক এই ঘটনায় ভেঙে পড়েছে সুকুর শেখের পরিবার। বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন রাহুলের মা গোলেনুর বিবি। দিদি রুকসানাও কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
পাত্রপক্ষকে পুরো ঘটনা জানিয়ে মেয়ের বিয়ে আপাতত বন্ধ রেখেছেন সুকুর শেখ। ঘটনার খবর পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা নরেন্দ্রনাথ তেওয়ারি।