শিল্পীর তুলির ছোঁয়ায় সাজবে মণ্ডপ

প্রতি বারেই অন্য স্বাদের ছোঁয়া থাকে এই পুজোয়। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মণ্ডপে ঢুকলে কোথাও চোখে পড়বে দেবীর কোলে গনেশ। নিখুঁত তুলির টানে আঁকা সেই ছবি দেবী দুর্গা নাকি কালীর তা নিয়ে ভাবতে ভাবতেই চোখ পড়বে তুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে ওঠা ফুল, পাখি, অরণ্য থেকে শুরু করে গ্রাম বাংলার ছবিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০৮
Share:

ক্যানভাসে মগ্ন দেবায়ন। — বািপ মজুমদার

প্রতি বারেই অন্য স্বাদের ছোঁয়া থাকে এই পুজোয়। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মণ্ডপে ঢুকলে কোথাও চোখে পড়বে দেবীর কোলে গনেশ। নিখুঁত তুলির টানে আঁকা সেই ছবি দেবী দুর্গা নাকি কালীর তা নিয়ে ভাবতে ভাবতেই চোখ পড়বে তুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে ওঠা ফুল, পাখি, অরণ্য থেকে শুরু করে গ্রাম বাংলার ছবিতে।

Advertisement

চিত্রশিল্পী দেবায়নের তুলির ছোঁয়ায় এ বার এ ভাবেই সেজে উঠছে হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকাবাজারের দেবী আরাধনার মণ্ডপ। বাঁধের ওপারে ফুলহার নদী। এ পারে ঝাঁ চকচকে সুদৃশ্য স্থায়ী মন্দির। প্রতি বছর পুজোয় অন্য স্বাদের খোঁজ করেন উদ্যোক্তারা। এ বার স্থানীয় চিত্রশিল্পী দেবায়ন ঘোষের সৃষ্টিকে তুলে ধরতে উদ্যোগী তাঁরা। মণ্ডপ জুড়েই থাকবে দেবায়নবাবুর আঁকা ছবি। ভালুকাবাজার সর্বজনীনের মণ্ডপে গেলেই দেখা যাবে একদিকে মৃণ্ময়ী দেবীমূর্তি গড়ার কাজ করছেন শিল্পী সুভাষ সরকার। পাশেই গত দুমাস ধরে মণ্ডপেই তুলির টানে একের পর এক ছবি এঁকে চলেছেন দেবায়ন।

প্রথাগত কোনও শিক্ষা নেই চিত্রশিল্পী দেবায়নের। চিত্রশিল্পী বাবাই ছিলেন তাঁর শিক্ষাগুরু। এক সময় আঁকার স্কুলে শিক্ষক ছিলেন। এখন রেলের কর্মী। কিন্তু চাকরির পাশাপাশি সময় পেলেই বসে পড়েন রং, তুলি হাতে। নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় নিমেষে যে কারও প্রতিমূর্তি রঙ-তুলি দিয়ে ফুটিয়ে তুলতে পারেন। আধুনিক শহরজীবনের সঙ্গে গ্রাম বাংলাও তাঁর ছবিতে মূর্ত হয়ে ওঠে। উদ্যোক্তারা এ বার স্থানীয় সেই শিল্পীকে মর্যাদা দিয়ে তুলে ধরতেই হাজির হয়েছিলেন দেবায়নবাবুর কাছে। ফিরিয়ে দেননি তিনি। বললেন, ‘‘মনের আনন্দে ছবি আঁকি। দর্শনার্থীদের যদি আমার ছবি আনন্দ দিতে পারে, ভালো লাগবে।’’

Advertisement

১২২ বছরের পুরনো ভালুকাবাজারের ওই পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। ওই পুজোকে ঘিরেই মেতে ওঠেন গোটা এলাকার বাসিন্দারা। সমাজ সচেতনতামূলক নানা প্রচারও চালানো হয় মণ্ডপে। গত বছর নাবালিকা বিয়ে বন্ধ, স্বচ্ছ ভারত অভিযান, দূষণ রোধে সচেতনতার প্রচার চালানো হয়েছিল। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের তরফে আয়োজিত সেরা দশটি পুজোর তালিকায় ঠাঁই হয়েছিল ওই পুজোর। মিলেছিল নগদ ১০ হাজার টাকা ও ট্রফি। এ বারেও পুজো মণ্ডপে ‘সেফ ড্রাইভ সেফ লাইফ’, ‘নির্মল বাংলা’-র মতো কর্মসূচি নিয়ে সচেতনতার প্রচার থাকছে। তার সঙ্গে দেবায়ন ঘোষের চিত্র প্রদর্শনী অন্য মাত্রা নিয়ে আসবে বলে আশায় উদ্যোক্তারা। পুজো কমিটির সম্পাদক রাজীবকুমার সাহা বলেন, ‘‘দেবায়নবাবু প্রচার বিমুখ। আমরা তাঁর সৃষ্টিকে তুলে ধরতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন