বৃষ্টি থেকে বাঁচতে প্লাস্টিকে ঢেকেছে মূর্তি। বালুরঘাটে শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র
পলাশের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে গোলাপ। সেই কবে থেকে সরস্বতী পুজো পালিত হয়ে আসছে বাঙালির ভ্যালেন্টাইন্স ডে হিসেবে। পলাশ ফুলে অঞ্জলি দিয়ে প্রিয়জনের হাতে গোলাপ ফুল তুলে দেওয়া—বেশ কিছু কাল ধরে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মিলনে এ ভাবেই পালিত হয়ে আসছে বসন্ত পঞ্চমী এই শুভ দিনটি। কিন্তু শুক্রবারের সাতসকালে বালুরঘাটের মেঘলা আকাশ ও ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে মুখভার সবারই।
আজ ও কাল—সরস্বতী পুজোর মুখে এই দু’দিনে মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টির পূর্বাভাসে তাই পড়ুয়া থেকে পুজো আয়োজকদের বেজায় মন খারাপ। আবহাওয়া দফতরের খবর অনুযায়ী, ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি দু’দিনই মেঘলা আকাশের সঙ্গে থাকবে হালকা ঝিরঝিরে বৃষ্টি। যার শুরু শুক্রবার সকাল থেকেই। ফলে প্রতিমাবিক্রেতা শিল্পী থেকে মণ্ডপসজ্জা ও পুজোর সামগ্রী বিক্রেতা—ক্ষতির আশঙ্কায় তাঁদের কপালে পড়েছে ভাঁজ। বালুরঘাটের প্রতিমাশিল্পী রমেন পাল, গৌতম দাসরা জানান, বায়না দেওয়া সরস্বতী প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। ছোট ছাঁচের প্রতিমাও বাজারে বিক্রির জন্য তৈরি। অথচ এ দিন সকাল থেকেই আকাশ কালো করে শুরু বৃষ্টি। খোলা আকাশের নীচে সার দিয়ে প্রতিমা সাজিয়ে গৌতমবাবুদের মতো শ’খনেক মৃৎশিল্পী কী করবেন তখন ভেবে পাচ্ছেন না। তাঁদের বক্তব্য, বৃষ্টিতে প্যান্ডেলের কাপড়, শোলার সাজসজ্জা নষ্ট হচ্ছে। শনিবার আবহাওয়া একই রকম থাকলে খুবই সমস্যা হবে।
বালুরঘাটের মাঝিয়ান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের নোডাল অফিসার জ্যোতির্ময় কারফরমা জানালেন, দক্ষিণ দিনাজপুরে শনিবার আকাশ পুরোপুরি মেঘলা থাকবে। রবিবার আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা। তবে শনি ও রবি দু’দিনই হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সরস্বতী পুজোর দু’দিন আবহাওয়ার ওই পূর্বাভাসে রীতিমত দুশ্চিন্তায় ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই।
প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ বা কলেজ—সব পড়ুয়ার কাছেই এ হল নিজের পুজো। পাঞ্জাবি আর শাড়ির দলে রাস্তা হয়ে ওঠে রঙিন। রাত পর্যন্ত স্কুলে থেকে মণ্ডপ সাজানো, বারোয়ারি পুজোর সজ্জা, পার্কের আড্ডা, প্রতিমা দর্শন—ভিলেন হয়ে সব কি মাটি করে দেবে আবহাওয়া? বৃষ্টি যেন না হয়, বাগদেবীর কাছে এখন সকলের এই একটাই প্রার্থনা।