পাথর বোঝাই লরির খালাসি সেজে অবাধেই যাতায়াত করত বাংলাদেশে। সেখান থেকে নয়া দু’হাজারের জালনোট সংগ্রহ করে পৌঁছে দিত চোরাকারবারীদের হাতে। নজর এড়িয়ে দীর্ঘ দিন ধরে এমনই কায়দায় জালনোটের কারবার চালাচ্ছিল মালদহের কালিয়াচক থানার সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দা মুকলেশ মিঞা ওরফে ভুট্টো। শনিবার রাতে নোট হাতবদল করার সময়েই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়।
ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়ি এলাকা থেকে ৯২ হাজার টাকার নতুন দু’হাজারের নোট সমেত তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ভুট্টো গ্রেফতার হতেই মালদহে ছুটে আসেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার(এনআইএ) কর্তারা। তাঁরাও জেরা করেন ভুট্টোকে। রবিবার ১০ দিনের হেফাজতে চেয়ে ধৃতকে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করে পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করে অন্য কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
নোট বাতিলের পর এই নিয়ে মালদহে মোট আট বার উদ্ধার হল নয়া দু’হাজারের জালনোট। আর গ্রেফতার হয়েছে মোট দশ জন কারবারী। এমনকী, মুর্শিদাবাদেও জালনোট উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে মালদহেরই দুই কারবারী। এ দিন রাত ১১টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়ি এলাকায় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ৯২ হাজার টাকার নতুন দু’হাজারের জালনোট সমেত পাচারের মূল কারবারী ভুট্টোকে ধরতে পারল পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ভুট্টোর বাড়ি গোলাপগঞ্জের সারদা গ্রামে। গ্রামের লোক জানেন সে গাড়ির খালাসির কাজ করে। দুই ছেলে-মেয়ে। দু’জনেই পড়াশোনা করে। পুলিশ জানিয়েছে, ভুট্টো মালদহের মহদিপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র দিয়ে পাথর বোঝাই লরির খালাসি সেজে পৌঁছে যেত বাংলাদেশের পানামা বন্দরে। সেখান থেকে বেশ কয়েকবার জালনোট নিয়ে এসে টাকার বিনিময়ে কারবারীদের কাছে পৌঁছে দিত। এ বারও সেই একই কায়দায় নোটগুলি সে নিয়ে আসে বলে দাবি পুলিশের। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার এক কর্তা বলেন, ওপার বাংলা থেকে তারকাঁটার বেড়ার এপারে কাপড়ে মুড়ে ছুড়ে দেওয়া হত জালনোট। তবে কাপড়ে মোড়া নোট অনেক সময় বিএসএফের হাতে পড়ে যেত।
তাই বিএসএফ ও পুলিশের নজর এড়াতে গাড়ির খালাসি সেজে জালনোট লেনদেন চলছে বলে অনুমান তাঁদের। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক জন জালনোট কারবারীকে জেরা করেই মুকলেশ ওরফে ভুট্টোর নাম পাওয়া যায়। সম্প্রতি তার একটি ছবিও জোগাড় করা হয়েছিল।’’ ভুট্টোকে জেরা করে আরও বড়ো কারবারীদের হদিশ মিলবে বলে আশাবাদী পুলিশ ও এনআইএ কর্তারা।