যাত্রা:ট্রেনে নেতা।নিজস্ব চিত্র
এলেন বিমানে। গেলেন ট্রেনে। বিমানবন্দরে যেমন ভিড় হয়েছে, স্টেশনে যেন ভিড় আরও বেশি।
মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ এনজেপি স্টেশন থেকে পদাতিক এক্সপ্রেসে বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে ঘিরে প্লাটফর্মে হুড়োহুড়িও হল। সাধারণ যাত্রীদের অনেকে প্রমাদ গুনলেন। অনেকে বলেই ফেলেন, এত বড় মাপের ভিআইপিরা ট্রেনে গেলে সাধারণ মানুষের অনেক সমস্যা হয়। এক বিজেপি নেতা তা শুনে বলেন, উনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতে চান বলেই ট্রেনে যাচ্ছেন!
দুপুরে নকশালবাড়ির কর্মসূচি সেরে অমিত যান শহরের ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। বিজেপির ডাকে বিশেষ সভায় প্রায় ৩৫ মিনিট বক্তব্য রাখেন সেখানে। দিনহাটার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অশোক মণ্ডলকে সেখানেই দলে বরণ করেন। মঞ্চে তুলে দলে নেন শিলিগুড়ির ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা মহানন্দ মণ্ডলকে।
রাতে ফেরার আগে এসএফ রোডে একটি অতিথিশালায় নৈশভোজে যোগ দেন। উত্তরবঙ্গের আট জন জেলা সভাপতি, জেলাগুলোর দায়িত্বে থাকা পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সভার শেষ দিকেই বৃষ্টি নামে মুষল ধারে। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বৃষ্টি থামতেই অমিত দ্রুত চলে যান এসএফ রোডে। জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া, রাহুল সিংহরাও। বিজেপি সূত্রের খবর, সেখানে তিনি জেলায় জেলায় সংগঠন বা়ড়ানো, মানুষের সঙ্গে সম্পর্কযাত্রা এবং সদস্যপদ সংগ্রহের উপরে জোর দিতে নির্দেশ দেন। জেলাগুলোয় দলীয় কার্যালয় তৈরির জন্য জমি দেখতে বলেন। ১৫ দিন করে ঘুরে জনসংযোগ গড়ে তুলতে নির্দেশ দেন। মজা করে বলেন, সবাইকে পরীক্ষায় ‘পাশ’ করতে হবে।
বৈঠক সেরে আটটা নাগাদ নৈশভোজে যোগ দেন। অহলুওয়ালিয়া, বিজয়বর্গীয় সঙ্গে একযোগে টেবিলে বসে চটপট খেয়ে নেন। তখনও তাঁকে ঘিরে ছবির তোলা এবং উদ্দীপনার শেষ ছিল না বিজেপি নেতাদের। কেউ রুটি, কেউ মিষ্টি এগিয়ে দিতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। মোবাইলে ছবি তুলে রাখতে ব্যস্ত দলের অনেকেই। ৮টা ২০ মিনিটে যখন স্টেশনের দিকে রওনা হলেন, তখন বাইক-গাড়িতে তাঁর পিছু নেন অনেকেই।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকেই এজেপিতে সাজো সাজো রব পড়ে। সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথি শীল চলন্ত সিড়ির পরিস্থিতি যেমন খতিয়ে দেখেন, তেমনিই আরপিএফের আইসি বিপ্লব মজুমদার প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সাড়ে ৮টা নাগাদ ট্রেন আসতেই ‘এইচই-১’ বিশেষ কোচের দেখভাল শুরু করা হয়। আরপিএফ এবং সিআরপিএফ দিয়ে কামরাটি কার্যত মুড়ে ফেলা হয়। শিয়ালদহ থেকে আসা কর্মীরা কামরারা সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখেন। ৯টা বাজার পাঁচ মিনিট আগে স্টেশনে পৌঁছে কামরায় উঠে প্ল্যাটফর্মের সকলকে হাত নেড়ে নিজের কুপের লোয়ার বার্থে চলে যান অমিত।