বাপ্পা সাহা
মূর্তি নদীতে বাপ্পা সাহার নিখোঁজের ঘটনায় নতুন মোড়! পুলিশের দাবি, সঙ্গীরাই ধাক্কা দিয়ে নদীর জলে ফেলে দিয়েছিলেন উঠতি ক্রিকেটার বাপ্পাকে। বন্ধু আনন্দ সরকারের কথায় তাঁর শ্যালক প্রতীক দাম বাপ্পাকে ধাক্কা দেন। তাতেই জলে পড়ে তলিয়ে যান বাপ্পা।
গত ১০ জুলাই মূর্তি নদীর ধারে পিকনিক করতে গিয়ে বাপ্পা নিখোঁজ হন। ঘটনার পর ১৩ জুলাই আনন্দ, প্রতীক ও তাঁদের গাড়িচালক দেবাশিস দে-কে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। আনন্দ ও প্রতীক পুলিশকে জানিয়েছিলেন, স্নান করতে নেমে নদীর জলে নিখোঁজ হয়ে যান বাপ্পা। কিন্তু তাঁদের বারবার জেরা করে পুলিশের দাবি, কোনও আক্রোশ থেকে আনন্দরা এই কাজ করে থাকতে পারেন। এ দিকে, বৃহস্পতিবার আদালতে ধৃতদের পাঁচদিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে পুলিশি হেফাজতে এবং একজনকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সুতীর্থ বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি আইনজীবী প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “বাপ্পার এখনও খোঁজ মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে ধৃতদের আরও জেরা করতে হবে।” এদিকে, এখনও বাপ্পার কোনও খোঁজ মেলেনি। তবে এ দিন সকালে ময়নাগুড়ি থানার জলঢাকা ও মূর্তি নদীর মিলনস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা একটি মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ পচাগলা মৃতদেহটি উদ্ধার করে। তবে দেহটি বাপ্পার নয় বলেই জানিয়েছে তদন্তকারী পুলিশ এবং পরিবার।
পুলিশের দাবি, পুরনো কোনও আক্রোশ এবং ঘটনার দিনেরও কিছু ঘটনা খুনের পিছনে কারণ। যাঁরা পিকনিক করতে গিয়েছিলেন তাঁদের কারও বাপ্পার কোনও আচরণ খারাপ লেগে থাকতে পারে বলেও পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিশের এক অফিসার বলেন, “আপাতত এতটুকুই জানা গিয়েছে। সবটাই লিখিত ভাবে আদালতে জানানো হয়েছে। পুরো ঘটনার কিনারা করতে ধৃতদের আরও কিছুদিন জেরা প্রয়োজন।”
জলপাইগুড়ি জেলা ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন বাপ্পা গত ৯ জুলাই তাঁর বন্ধু আনন্দের সঙ্গে মূর্তির পাড়ে গিয়েছিলেন। সঙ্গে আনন্দের স্ত্রী এবং শ্যালক ছিলেন। আনন্দের বিবাহবার্ষিকী পালন করতে নদীর পাড়ে সকলে গিয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, নদীর পাড়ে মদ্যপান করেন তাঁরা। স্নানের পরে আনন্দের স্ত্রী পোশাক বদলাতে গাড়ি নিয়ে পাশের রিসর্টে যান। সেই সময় আনন্দের নির্দেশে প্রতীক বাপ্পাকে দলে ফেলে দেয় বলে পুলিশ আদালতে জানিয়েছে।
পুলিশের দাবি মানতে চাননি আনন্দ এবং প্রতীকের পরিবারের সদস্যরা। আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় আনন্দ বলেন, “যা জানানোর আদালতকে জানাব।” আনন্দ এবং প্রতীকের আইনজীবী শান্তনু ভৌমিক বলেন, “পুলিশ প্রথম থেকেই মনগড়া গল্প সাজাচ্ছে। এ দিন আদালতে ভুল দাবি প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। আনন্দ, প্রতীক দুজনেই নির্দোষ।”