প্রত্যয়ী: সৌরভ দাস।
সামান্য কৃষিজমিটুকুই সম্বল। তাই গভীর রাতে ধানের লোভে সেই জমিতে হাতি নামলেই পড়া ফেলে যেতে হত হাতি তাড়াতে। ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে আবার পড়ায় মন। দিনের বেলাতেও চাষের জমিতে পরিশ্রম। সংসার চালানোর রসদ জোটাতে। এ ভাবেও যে মাধ্যমিকে তাক লাগিয়ে দেবার মত ফল করা যায় সেটাই দেখিয়ে দিল গজলডোবা উচ্চ বিদ্যালয়ের সৌরভ দাস।
সৌরভের প্রাপ্ত নম্বর ৫৬৫। চাষের কাজে বাবাকে সাহায্য করে বাকি সময় পড়াশুনো করতে হত সৌরভকে। তাঁর পছন্দের বিষয় অঙ্ক আর বিজ্ঞান। অঙ্কে ৯৪ পেয়ে স্কুলের সবাইকে অবাক করেছে সে। সৌরভের বাড়ি জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের মান্তাদাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের টাকিমারি এলাকায়। ছেলের এ রকম ফল শুনে উচ্ছ্বসিত বাবা শ্যামল ও মা অন্যাদেবী।
কিন্তু সৌরভ এ বার বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়। জলপাইগুড়ি শহরের ভাল কোনও স্কুলে ভর্তি হতে চায়। দরকার বিজ্ঞানের একাধিক বিষয়ের গৃহশিক্ষকও। গজলডোবাতে পড়াতেই যেখানে নাভিশ্বাস, সেখানে জলপাইগুড়িতে থেকে পড়াশুনোর খরচ কোথা থেকে জুটবে সেটাই আনন্দের দিনেও দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে দাস পরিবারের। সৌরভ অবশ্য বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে খুব তাড়াতাড়ি নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। অনটনের সংসারে বাবা মায়ের মুখে হাসি ফোটানোই এখন ওর একমাত্র স্বপ্ন। গজলডোবার শিক্ষকরাও সৌরভের পাশেই রয়েছেন। স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ না থাকায় অন্য স্কুলে সৌরভের ভর্তির বিষয়েও সাহায্যও করবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।