ট্যাব-প্রোজেক্টরে বিনামূল্যে ‘মস্তির’ পাঠশালা

সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ মৃণালকান্তি সিংহ ও সভাপতি অভিজিৎ কুণ্ডুর দাবি, উত্তর দিনাজপুর জেলায় এই প্রথম দুঃস্থ পরিবারের ছেলেমেয়েদের জন্য এই ধরনের পাঠশালা চালু হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০০
Share:

ক্লাস চলছে। নিজস্ব চিত্র

ওদের কারও বাবা দিনমজুর, কারও বাবা ধোপার কাজ করেন বা রাজমিস্ত্রি। রায়গঞ্জের স্টেশন সংলগ্ন রেলিগোলা এলাকার এ রকমই দুঃস্থ পরিবারের ৩-১৩ বছর বয়সী ৪৭ জন শিশু-কিশোরকে নিয়ে ‘মস্তি কী পাঠশালা’ চালু করল শহরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রেরণা।

Advertisement

রবিবার রায়গঞ্জের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের উকিলপাড়া এলাকায় ওই সংগঠনের সম্পাদক কৌশিক চক্রবর্তীর বাড়িতে ওই পাঠশালা চালু হয়েছে। কৌশিকবাবুর দাবি, টাকার অভাবে দুঃস্থ পরিবারগুলির অভিভাবকদের পক্ষে তাঁদের ছেলেমেয়েদের আধুনিক শিক্ষাদান, উপযুক্ত পুষ্টি, চিকিত্সা ও সংস্কৃতি চর্চা করানো সম্ভব হয় না। সেই কারণে, সংগঠনের তরফে এলাকার সেই সব দুঃস্থ পরিবারের ছেলেমেয়েদের নিয়ে বিনা খরচে এই ‘মস্তি কী পাঠশালা’ চালু করা হল।

সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ মৃণালকান্তি সিংহ ও সভাপতি অভিজিৎ কুণ্ডুর দাবি, উত্তর দিনাজপুর জেলায় এই প্রথম দুঃস্থ পরিবারের ছেলেমেয়েদের জন্য এই ধরনের পাঠশালা চালু হল। তাঁদের দাবি, পাঠশালায় এখনও পর্যন্ত নথিভুক্ত ৪৭ জন ছেলেমেয়ে বিভিন্ন সরকারি স্কুলে প্রাক প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। তাদের মধ্যে ২৩ জন বালিকা রয়েছে! প্রতি সপ্তাহের শনিবার দুপুর ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা ও রবিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত ওই পাঠশালা চালু থাকবে।

Advertisement

বিনা খরচে শিশু, বালক-বালিকাদের টিভি, ট্যাব, প্রোজেক্টর ও স্কাইপের মাধ্যমে ইংরেজি, বাংলা, অঙ্ক, সাধারণ জ্ঞান সহ সামাজিক ও পারিবারিক কর্তব্য শেখানো হবে। পাশাপাশি, ছেলেমেয়েদের পুষ্টিবিকাশের স্বার্থে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ডিম, কলা, মুসম্বি, নুডলস, জুস খাওয়ানো হবে। প্রতি মাসে চিকিত্সকদের এনে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে ওষুধ দেওয়া হবে। এ ছাড়াও কচিকাঁচাদের নাচ, গান, আবৃত্তি ও হস্তশিল্পও শেখানো হবে। সংগঠনের সদস্যরা নিজেরাই চাঁদা দিয়ে ওই পাঠশালা চালু রাখবেন বলে দাবি করেছেন।

ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিরুদ্ধ সাহার বক্তব্য, ‘‘দুঃস্থ পরিবারগুলির ছেলেমেয়েদের অনেকেরই মেধা রয়েছে। কিন্তু অভিভাবকেরা টাকার অভাবে ছেলেমেয়েদের আধুনিক শিক্ষাদান, চিকিত্সা করাতে পারেন না। এতে বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বিঘ্নিত হয়। প্রেরণার সদস্যরা এগিয়ে আসায় পুরসভার তরফে তাঁদের ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।’’

তৃতীয় শ্রেণির আলপনা রজক, অভয় পাসওয়ান, পঞ্চম শ্রেণির সন্টু পাসওয়ান বলে, ‘‘আমরা টিভি, ট্যাব, প্রোজেক্টর, স্কাইপের মাধ্যমে পড়াশোনা সহ নাচ, গান, আবৃত্তি ও হস্তশিল্পের কাজ শেখার সুযোগ পাব, তা কোনও দিন ভাবতেও পারিনি। ছবি ও ভিডিও দেখে পাঠশালায় সহজেই পড়া বুঝতে পারছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন