জেলার পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবালকে বদলি করা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে রাজনীতিকদের মধ্যেই। যেমন, বিজেপির দাবি, অনুপবাবু নিরপেক্ষ ভাবেই কাজ করছিলেন বলে তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। আবার আর একটি মহলের দাবি, অনুপবাবুর সঙ্গে মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং ইদানীং তাঁর পুলিশ বিরোধীদের প্রতি নমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছিল বলে শাসকদলের থেকেই অভিযোগ উঠেছে। শাসক দলের নেতারা বা পুলিশ অবশ্য সে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
অনুপবাবুর ১৪ মাস দায়িত্ব পালনের পরে ১৯ ডিসেম্বর বদলির নির্দেশ আসে। তখন সহকর্মীদের অনেকেরই বিস্ময় গোপন থাকেনি। কেন বদলি করা হল অনুপবাবুকে, নিজেদের মতো করে ব্যাখ্যা খুঁজেছেন তাঁরা। অনেকে দাবি করছেন, ইদানীং নাকি কোচবিহারে বিজেপির প্রতি অনেকটাই নমনীয় ভূমিকা নিয়েছিল পুলিশ। আর তা অনুপের নেতৃত্বেই। সেটা পছন্দ করেনি তৃণমূলের হাইকমান্ড। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীতলখুচির এক তৃণমূল নেতার কথায়, “নানা ভাবে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি করে সংগঠন শক্তিশালী করছে বিজেপি। পুলিশ কিছু নেতাকে গ্রেফতার করলেও বিজেপির ছক নষ্ট করতে পারছে না। একের পর এক জায়গায় এমনটা হয়েছে।” আবার কারও কারও দাবি, দিন কয়েক হল শাসকদলের কিছু নেতার উপরে বিশেষ করে নজর রাখছিল পুলিশ। যদিও কেউই অভিযোগ মানতে চাননি।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এটা রুটিনমাফিক বদলি। এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। যোগ্য লোকদের যোগ্য জায়গায় দিচ্ছে সরকার।” তৃণমূলেরই আরেক নেতা বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “এটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা ঠিক নয়।” অনুপবাবু বললেন “প্রত্যেকটি অভিযোগের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কে কী বলছেন জানি না। যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পালন করব।”
বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মন বলেন, “গত কয়েক মাস ধরে কোচবিহারের পুলিশ সুপার নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করছিলেন। যেটা রাজ্যের শাসক দলের পছন্দ হয়। তাই ওই অফিসারকে আচমকা বদলি করে দেওয়া হল বলে মনে হচ্ছে।”