আলিপুরদুয়ার বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে পুলিশ মর্গের অনুমোদন দিল রাজ্য সরকার। এ জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের মঞ্জুরিও রাজের তরফে দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক শুভাঞ্জন দাস জানিয়েছেন, আগামী এক বছরের মধ্যে বীরপাড়ার ওই হাসপাতালে পুলিশ মর্গ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
১৯৮১ সালে বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালটি তৈরি হয়। এই হাসপাতালের উপর বীরপাড়া ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন এলাকার প্রচুর মানুষ নির্ভরশীল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ওই হাসপাতালে মর্গ গড়ে ওঠেনি। যার জেরে অনেক দিন থেকেই এলাকায় এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল।
সূত্রের খবর, বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে কোনও মর্গ না থাকায় রাতবিরেতে দেহ আসলে হাসপাতালের পিছন দিকে অফিসের নীচের তলায় অবস্থিত একটি জায়গায় থাকা কাঠের বাক্সে তা রাখতে হয়। পরের দিন আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর আগে পর্যন্ত কাঠের বাক্স বন্দি অবস্থাতেই পড়ে থাকে মৃতদেহটি। কখনও রাতের বেলায় দুটি দেহ হাসপাতালে এলেও, ওই কাঠের বাক্সটিতেই গাদাগাদি করে রাখা হয় দুটি দেহ। নিরাপত্তার জন্য প্যাসেজের দু’দিকে অবশ্য দু’টি কোলাপসিবল গেট রয়েছে।
কিন্তু অভিযোগ, এ ভাবে রাখার জন্য কিছু দিন আগে একটি মৃতদেহ ইঁদুরে খুবলে খায়। বছর কয়েক আগেও আরও একবার একই ঘটনা সেখানে ঘটেছিল বলেও অভিযোগ। কিন্তু শেষবারের ঘটনার পরে ফের একবার বীরপাড়ার ওই হাসপাতালটিতে পুলিশ মর্গ তৈরির দাবি উঠতে শুরু করে।
বুধবার জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে পুলিশ মর্গের অনুমোদন রাজ্য থেকে মিলেছে। মিলেছে মর্গ তৈরির আর্থিক অনুমোদনও।
আপাতত মর্গটি তৈরির জন্য ৯১ লক্ষ টাকা ধরা হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক বলেন, “সাত দিনের মধ্যে পুলিশ মর্গ তৈরির টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। আশা করছি, মার্চ মাসের শুরুতে কাজও শুরু হয়ে যাবে। এক বছরের মধ্যে এই মর্গ তৈরির প্রক্রিয়া শেষ করা যাবে।”
বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের সুপার বিদ্যুৎ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের হাসপাতালে একটি পুলিশ মর্গের খুবই প্রয়োজন ছিল। তা মঞ্জুর হওয়ায় খুশি। মর্গটি গড়ে উঠলে প্রচুর মানুষ উপকৃত হবেন।’’
একই কথা বলছেন স্থানীয় প্রশাসন ও এই হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও।