অসুস্থ: শিলিগুড়ির হাসপাতালে জান্নাতুন। নিজস্ব চিত্র
আজ বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার নার্সিংহোম থেকে জান্নাতুন ফিরদৌসিকে নিয়ে কলকাতায় রওনা হবেন পরিবারের লোকেরা। সঙ্গে যাবেন তাঁর বাবা পেশায় দিনমজুর আমজাদ আলি এবং পরিবারের পরিচিত অপর এক ব্যক্তি ফজলুর হক। আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দফতররে দুই স্বাস্থ্য কর্মীও যাবেন। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জান্নাতুনের উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হচ্ছে কলকাতার এমএসকেএম হাসপাতালে। মেয়েকে সুস্থ করে ফিরতে চান আমজাদ। তাঁর সেই আশা কবে পূরণ হবে তা অবশ্য সময়ই বলবে বলে মনে করছেন পরিচিতেরা।
সরকারের শিশু সাথী প্রকল্পে হৃৎপিন্ডের ফুটোর চিকিৎসা করাতে ডুয়ার্সের রাঙালি বাজনার কিশোরী জান্নাতুনকে নিয়ে আসা হয়েছিল শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে। ২০১৫ সালের ২৭ জুলাই অস্ত্রোপচারের পরে তখন সদস্য মাধ্যমিক দেওয়া ওই ছাত্রী পঙ্গু হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। যে মেয়ে সাইকেল চালিয়ে রোজ স্কুলে যেত, পড়াশোনা করত, মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে সে পঙ্গু হয়ে পড়ায় তাকে নিয়ে বিপাকে পড়েন পরিবারের লোকেরা। তাঁকে সুস্থ করতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে নেতাদের অনেকের কাছেই ছুটেছেন আমজাদ আলি। কাজ হয়নি। এমনকী অভিযোগ, প্রতি মূহূর্তেই নার্সিংহোম থেকে চলে যেতে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সাড়া না-পেয়ে পরিচিতদের নিয়ে গিয়ে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে চাপ দিলে তবে তারা জান্নাতুনকে রাখতে বাধ্য হয়েছে। সেই থেকে প্রায় আড়াই বছর ধরে নার্সিংহোমে রয়েছে জান্নাতুন।
জান্নাতুনের পরিবারের পাশে দাঁড়ায় লিগ্যাল এড ফোরাম। শিশু পাচার-সহ শিশুদের চিকিৎসায় বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে জন স্বার্থে মামলা করা হয়। তার মধ্যে জান্নাতুনের বিষয়টিও ছিল। আদালত থেকে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপারদের কাছে। তার পরেই জান্নাতুনের বিষয়টি নাড়াচাড়া শুরু হয়। স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রতিনিধি দল এসে জান্নাতুনের পরিস্থিতি দেখে যায়। উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হবে আশ্বাসও দেন।
এদিন আলিপুরদুয়ার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মাও ফোন করে আমজাদ আলিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। আজ, বৃহস্পতিবার পদাতিক এক্সপ্রেসে তারা রওনা হবেন। নার্সিংহোম থেকে গাড়িতে করে জান্নাতুনকে স্টেশনে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। আমজাদ আলি বলেন, ‘‘মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছি। ও সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্য দফতরের তরফে সমস্ত ব্যবস্থা করা হবে বলেই আশা করছি।’’