উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধুন্ধুমার

উপাচার্য বলেন, ‘‘১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠক আছে সেখানেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব আমরা।’’           

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৯ ০৭:১৫
Share:

উত্তেজনা: হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আহতকে। বুধবার। ছবি: স্বরূপ সরকার

ছাত্রছাত্রীদের অবস্থান-বিক্ষোভ, আন্দোলন তারপরে শিক্ষাকর্মীদের পাল্টা আন্দোলন। এর জেরে বুধবার দিনভর উত্তপ্ত থাকল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। অভিযোগ উঠেছে মারধরের। পরিস্থিতি সামলাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে হয় পুলিশকে।

Advertisement

এ দিন বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা মঞ্জুলা বেরাকে বহিষ্কারের দাবিতে কয়েকজন পড়ুয়া উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যের ঘরের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। উপাচার্যের দাবি, তিনি আন্দোলনরত পড়ুয়াদের চারজনকে ঘরে ডেকে কথা বলার জন্য বলেছিলেন। কিন্তু তা না মেনে সকলে একসঙ্গে ঘরে ঢোকার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। সেইসময় ওই পড়ুয়াদের বাধা দেন কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষী গোপাল সন্ন্যাসী। তখনই তাঁকে ওই পড়ুয়ারা মারধর করেন বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই অজ্ঞান হয়ে যান গোপাল। সেসময় উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়কেও শারীরিক হেনস্থা করা হলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান বলে অভিযোগ। তা দেখে অন্য কর্মীরা এগিয়ে এলে পড়ুয়াদের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তার জেরে আনন্দ বর্মণ নামে চতুর্থ সেমেস্টারের এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে দাবি আন্দোলনরত পড়ুয়াদের। এ দিকে এক শিক্ষাকর্মীকে মারধরের খবর পেয়ে বিভিন্ন বিভাগ থেকে শিক্ষাকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে পাল্টা অবস্থান শুরু করেন। সকাল সাড়ে দশটা থেকে বেলা প্রায় তিনটে পর্যন্ত চলে অবস্থান।

বাংলার বিভাগীয় প্রধান হওয়া এবং আরও নানা বিষয় নিয়ে কিছুদিন আগে থেকেই ওই বিভাগের শিক্ষিকা মঞ্জুলা বেরা ও নিখিলচন্দ্র রায়ের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়েছিল। তার জেরে ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশের মধ্যেও তৈরি হয়েছে দু’টি ভাগ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মঞ্জুলা বেরাকে সরিয়ে কয়েকদিন আগেই বাংলার বিভাগীয় প্রধান করেছে নিখিলকে। তারপরেও এ দিন কয়েকজন পড়ুয়া মঞ্জুলার বহিষ্কার দাবি করে বিক্ষোভ দেখান। এ দিন প্রথম দিকে ঝামেলার পরে উপাচার্যের ঘরের সামনে এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শিক্ষাকর্মীরা। তখনও আর একদিকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন পড়ুয়ারা। তার জেরে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। পরে মাটিগাড়া থানার ওসি সুবল ঘোষের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভের পরে পড়ুয়া ও কর্মচারীদের আলাদা প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানায়। ছাত্রনেতা পবিত্র রায় বলেন, ‘‘কর্মচারীরা আমাদের মেরে আমাদের বিরুদ্ধেই মারধরের মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।’’ উপাচার্যের ঘরেই এ দিন বিশ্বজিতের চিকিৎসা হয়। শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি গোপাল। অসুস্থ দুই ছাত্র ভর্তি আছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। শিক্ষাকর্মী সমিতির সভাপতি শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘গুটি কয়েক ছাত্র-ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করছেন। তাঁদেরকে ইন্ধন দিচ্ছেন কয়েকজন শিক্ষক।’’ ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আজ, বৃহস্পতিবার থেকে প্রতিদিন ১২টা থেকে বেলা ২ টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনে আন্দোলন চালাবেন বলেই জানিয়েছেন শঙ্কর। উপাচার্য বলেন, ‘‘১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠক আছে সেখানেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব আমরা।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন