বোতল, হাড়গোড় সরিয়ে শুরু হয় স্কুল 

কেন এই অবস্থা? স্কুলের শিক্ষক এবং স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, স্কুলটির কোনও সীমানা পাঁচিল নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

জামালদহ শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৩৬
Share:

আবর্জনা: স্কুলের সামনে এ ভাবেই ছড়িয়ে থাকে নোংরা, উচ্ছিষ্ট। বৃহস্পতিবার দেউতিরহাটে। নিজস্ব চিত্র

স্কুলে এসে প্রথমেই কী করা উচিত ছাত্রছাত্রী বা শিক্ষক-শিক্ষিকার? কেউ বলবেন, প্রার্থনার পরে ক্লাসে যাওয়া। কেউ বলবেন, ক্লাস শুরু করা। কিন্তু মেখলিগঞ্জ ব্লকের উছলপুকুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের দেউতিরহাট এলাকার শালতলি এপি প্রাথমিক স্কুলের পডু়য়া থেকে শিক্ষক, সকলের কাজ স্কুল চত্বর সাফ করা। সেখানে তখন ছড়িয়ে রয়েছে মাংসের হাড়, মদের বোতল, সিগারেটের খালি প্যাকেট আর খাবারের উচ্ছিষ্ট। স্কুলের শিক্ষকরা এখন প্রশ্ন তুলেছেন, এই অবস্থা আর কত দিন ধরে চলবে? দাবি করেছেন, ছাত্র ছাত্রী ও বিদ্যালয়ের স্বার্থে এই সমস্যা মেটানো দরকার।

Advertisement

কেন এই অবস্থা? স্কুলের শিক্ষক এবং স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, স্কুলটির কোনও সীমানা পাঁচিল নেই। আর এই স্কুলের পাশেই রয়েছে দেউতিরহাট বাজার। পাঁচিল না থাকায় বাজারের অস্থায়ী কিছু দোকানপাট স্কুলের মাঠেই বসে যায়। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, সন্ধ্যা হতেই স্কুলের ক্লাসরুম, অফিসের বারান্দা ও মাঠে বসে মদ ও জুয়ার আসর। কিন্তু সব দেখেও নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই নিয়ে তাঁরা কেউ মুখ খোলেন না। রোজ সকালে এসে এই ‘আসরের’ উচ্ছিষ্টই সাফ করতে হয়ে খুদে পড়ুয়াদের।

স্কুলের সহশিক্ষক জগদীশ শর্মা বলেন, ‘‘প্রত্যন্ত এলাকার এই স্কুলে পড়াশোনা থেকে মিড ডে মিল, কোনও কিছু নিয়েই সমস্যা নেই। কিন্তু স্কুলের পাঁচিল না থাকায় এক দিকে পাশের হাটের দোকান যেমন তাদের মাঠে বসে, তেমনই রাতে স্কুলের খোলা চত্বরে অনেক দিন ধরেই অসামাজিক কাজকর্ম চলছে। তার ফলে রোজ স্কুলে এসে ২০-২৫ মিনিট ধরে বারান্দা ও মাঠের মদের বোতল, মাংসের হাড়গোড় সাফ করতে হয়।’’

Advertisement

ওই শিক্ষকের কথায়, ‘‘এ ভাবে কোথাও ছাত্রছাত্রীদের স্কুল সাফ করে ক্লাস শুরু করতে হয় না। এমনকি, মাঠে বোতল পড়ে থাকায় ওরা খেলতে অবধি পারে না। ওদের জন্য এখনই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’

স্কুল সূত্রে খবর, তারা একাধিকবার পাঁচিল তৈরির আবেদন করেছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য কণিকা রায় বলেন, ‘‘রাতে অসামাজিক কাজের জন্য স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সমস্যায় পড়ছে ছাত্রছাত্রীরা। দ্রুত পাঁচিল তৈরির উদ্যোগ নিক স্কুল শিক্ষা দফতর।’’

বিষয়টি নিয়ে মেখলিগঞ্জের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বরুণ বিশ্বাসকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ওই স্কুলের সমস্যা নিয়ে এর আগেও অভিভাবক ও স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। আবারও বৈঠক করা হবে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রয়োজনে থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিতে পারেন। পাঁচিল তৈরির বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন