ব্যস্ততা: স্কুল ফেলে জল আনতে চলেছে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
ভোর হতেই হাঁকডাক শুরু হয়ে যায় স্কুল পড়ুয়া জয়, অগ্রদূত, অভয়দের। স্কুল বা টিউশনে যাওয়ার জন্য নয়, তাদের ব্যস্ততা পানীয় জল সংগ্রহের জন্য।
কারণ গ্রামে মেলে না পরিশ্রুত পানীয় জল। বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে সাইকেলে করে পানীয় জল আনতে হয় তাদের। শুধু খুদেরাই নয়, সাইকেলে ড্রাম বেঁধে এমনই ভাবে রোজ পানীয় জল সংগ্রহ করতে হচ্ছে মালদহের হবিবপুর ব্লকের ঋষিপুর গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের। গরমে ঋষিপুর গ্রামপঞ্চায়েত জুড়েই চলছে পানীয় জলের সংকট। সমস্যা মেটাতে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের হাজার পাঁচেক বাসিন্দার ভরসা প্রতিবেশী শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গান্ধীনগর গ্রামের জলাধার। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হবিবপুর ব্লকের ঋষিপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় জন স্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের একটি পরিশ্রুত পানীয় জলের জলাধার রয়েছে। অভিযোগ, সেই জল খাওয়ার যোগ্য নয়। কারণ মাটির তলা থেকে জল তুলে তা পরিশ্রুত করার কথা থাকলেও করা হয় না। সরাসরি পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবরাহের করার ফলে সেই জল খাওয়া যায় না। এছাড়া পঞ্চায়েতের তরফে গ্রামে বসানো হয়েছে দশটি টিউবওয়েল। তবে গরমের শুরু থেকেই অধিকাংশ টিউবওয়েল অকেজো। একই সঙ্গে সাব-মার্সিবাল পাম্প গুলিও অকেজো হয়ে পড়ায় জল সংকটে ভুগছেন ওই গ্রামপঞ্চায়েতের ফলিমারি, আসরফপুর, দেবীনগর, দুমবানু, দক্ষিণ চাঁদপুর, অনন্তপুর সহ দশটি গ্রামের মানুষ। এই গ্রাম গুলি থেকে চার কিলোমিটার দূরে শ্রীরামপুর গ্রামপঞ্চায়েতের গান্ধীনগর গ্রাম। সেই গ্রাম থেকেই পানীয় জল সংগ্রহ করতে হয় ঋষিপুরের বাসিন্দাদের। বাড়ি থেকে অনেক দূর। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মহিলাদের পক্ষে জল সংগ্রহে যাওয়া সম্ভব হয় না। গ্রামের ছেলেরাই সকাল বিকেল নিয়ম করে জল আনতে ছুট লাগায় প্রতিবেশী গ্রামপঞ্চায়েতে।
সপ্তম শ্রেণির ছাত্র জয়, অগ্রদূত, অভয়রা জানায়, জলের জন্য সময় মতো টিউশন যাওয়া হচ্ছে না। ঘুম থেকে উঠেই সবাই মিলে সাইকেলে করে জল আনতে যেতে হচ্ছে। বিধায়ক ভুপেন্দ্রনাথ হালদার বলেন, ‘‘সমস্যা মেটাতে আমার বিধায়ক তহবিল থেকে জলের পাম্প বসানো হয়েছিল। আমার পক্ষে যা করা সম্ভব তা করা হবে।’’ হবিবপুর ব্লকের বিডিও ফুর্বা দর্জি শেরপা জানান, জল সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হবে।