একমন: নরহাট্টা স্কুলে পাশাপাশি পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
জেলার প্রাইমারি স্কুলগুলিতে মে মাসের ২২ তারিখ থেকেই গরমের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ছুটি হলেও ছুটি নেই জেলার একাধিক প্রাথমিক স্কুলে।
গ্রীষ্মবকাশের ছুটিতে রবিবার বাদে প্রতিদিনই সকালে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা করে ক্লাস চলছে সেই স্কুলগুলিতে। মূলত, বাংলা ও অঙ্ক ক্লাসই নেওয়া হচ্ছে। খেলাধুলো ও লার্নিং মেটেরিয়াল নিয়েও খেলাচ্ছলে লেখাপড়াও রয়েছে। একে ছুটি, তায় মিড-ডে মিলের বালাই না থাকলেও পড়ুয়াদের হাজিরা কিন্তু নজরকাড়া। কিন্তু ছুটিতে কেন এমন ক্লাসের এই ভাবনা?
জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, ছুটির আগে বেশ কিছু প্রাইমারি স্কুলে একটি সমীক্ষা হয়েছিল, তাতে উঠে এসেছিল যে প্রথম শ্রেণির অনেক পড়ুয়াই বাংলা বর্ণ চেনে না। কেউ আবার শব্দ গঠন করতে পারে না। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির একাংশ পড়ুয়া আবার ঝরঝরে বাংলা বই রিডিংও পড়তে পারে না। সাধারণ যোগ-বিয়োগ সহ অঙ্কেও একই হাল। সেই সমস্ত পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের চিহ্নিত করে ছুটির সময় ক্লাসে পড়িয়ে অন্য পড়ুয়াদের সমতুল্য করে তুলতেই এমন ভাবনা। তবে শুধু পড়ুয়ারাই নয়, অন্য পড়ুয়ারাও স্বেচ্ছায় স্কুলে এসে ক্লাস করেছে। ওই সংস্থার জেলা কো-অর্ডিনেটর তাপস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলার ১৫টি ব্লকের মধ্যে ১১টি ব্লকের প্রায় ৮৪৬টি প্রাইমারি স্কুলে এভাবে ছুটিতেও ক্লাস চলছে।’’
শনিবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ক্লাস চলছিল ইংরেজবাজার ব্লকের নরহট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্গাপুর স্টেটপ্ল্যান প্রাইমারি স্কুলে। প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির ১৬৪ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে এদিন প্রায় ৮০ শতাংশই হাজির ছিল। একটি ক্লাসে ছিলেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তপনকুমার মণ্ডল, ‘‘অনেকে বাংলার যুক্তবর্ণগুলি চিনে বলতে পারছিল না। এখন এই কয়েকদিনে শুধু বাংলা ও অঙ্ক ক্লাস নেওয়ায় তাঁরা সেগুলিতে সাবলীল হয়েছে।’’