দরিদ্র ঘরের সন্তানেরাই সবার উপরে

কারও বাবা রাজমিস্ত্রির সঙ্গে কাজ করেন। কারও বাবা আবার কৃষি শ্রমিক। এমন পরিবারের সন্তানেরাই মাদ্রাসার পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়ে মুখ উজ্জ্বল করেছেন জেলার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৯ ০৪:১১
Share:

উজ্জ্বল: আসমিন খাতুন। নিজস্ব চিত্র

এক জনের বাবা দিন মজুর। আর এক জনের বাবা রাজমিস্ত্রির সঙ্গে কাজ করেন। আর এক জনের বাবা কৃষি শ্রমিক। এমন পরিবারের সন্তানেরাই মাদ্রাসার পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়ে মুখ উজ্জ্বল করেছেন জেলার।

Advertisement

রাজগঞ্জ ভোলাপাড়া হাই মাদ্রাসার ছাত্রী ফুলেরা খাতুন ৬৫২ নম্বর পেয়ে এখনও পর্যন্ত জলপাইগুড়ি জেলায় সম্ভাব্য প্রথম স্থান অর্জন করেছে বলে সূত্রের খবর। ফুলেরার বাবা আমিজউদ্দিন শ্রমিকের কাজ করেন। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় এই পরিবারের। মাদ্রাসা পরীক্ষায় ফুলেরার প্রাপ্ত নম্বর প্রায় ৮১ শতাংশ বলে মাদ্রাসা সূত্রের খবর।

ফুলেরা তাই জলপাইগুড়ি- শিলিগুড়ি দুই শহর মিলিয়েই আপাতত প্রথম স্থানে। এ দিন জলপাইগুড়ি- ধূপগুড়ি জাতীয় সড়কের ঝাঝাঙ্গিতে স্কুল খোলার দাবিতে ছাত্রছাত্রীদের পথ অবরোধের জেরে মার্কশিট পৌঁছয়নি ধূপগুড়ির পাটকিদহ হাই মাদ্রাসা এবং গাদং হুজুরিয়া সিনিয়র হাই মাদ্রাসায়। ওই দুই মাদ্রাসা সূত্রের খবর, শুক্রবার সকালে মার্কশিট আনা হবে। তার পরেই জানা যাবে, ফুলেরার চেয়েও বেশি নম্বর পেয়েছেন কি না।

Advertisement

রাজগঞ্জ ভান্ডারিগজ শুরুবাড়ি হাই মাদ্রাসা থেকে মোট ৮৫ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন বলে মাদ্রাসার তরফে জানানো হয়। পাশ করেছেন ৪৭ জন। বালাবাড়ি একরামিয়া হাই মাদ্রাসা থেকে মোট ২১ জন পরীক্ষা দেন এবং সবাই পাশ করেছেন বলে এই মাদ্রাসা সূত্রের খবর। ভোলাপাড়া হাই মাদ্রাসা থেকে ১৪০ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং সবাই পাশ করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসা সূত্রের খবর।

কৃষি শ্রমিকের ছেলে মহম্মদ জাহিদ ৭৭.৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে যেখানে শিলিগুড়ি মহকুমায় সম্ভাব্য প্রথম। উর্দু মাধ্যমে ৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে মেয়েদের মধ্যে সম্ভাব্য প্রথম আসমিন খাতুন। তাঁর বাবা রাজমিস্ত্রির সঙ্গে কাজ করেন।

ফুলেরা, আসমিন, মহম্মদ জাহিদ আরও পডাশোনা করতে চান। কিন্তু প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াচ্ছে তাঁদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা। ফাঁসিদেওয়ার মিলনগড় হাইমাদ্রাসার ছাত্র জাহিদের পরিবারে ছয় বোন, দুই ভাই। চটহাটের বাসিন্দা জাহিদের কথায়, ‘‘ডাক্তারি পড়তে চাই কিন্তু বাবা কতটা সাহায্য করতে পারবেন, জানি না।’’ সামশিয়া হাই মাদ্রাসার আসমিন ফাড়াবাড়ির বাসিন্দা। ওই পরিবারেও ৬ জন সদস্য। তাঁর বাবা মহম্মদ জালাল বলেন, ‘‘ও বড় হয়ে শিক্ষিকা হতে চাইছে। তবে যতই কষ্ট হোক, আরও পড়তে চাইলে ওকে পড়াব।’’ শিলিগুড়ি মহকুমার চারটি মাদ্রাসার মধ্যে চৌপুকুরিয়া হালালজোতের হালাল হাইমাদ্রাসার ছাত্রী কৃতী সিংহ ৬৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে মাদ্রাসার সেরা হয়েছে। তার বাবা দুলালবাবু পেশায় অটোচালক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন