ফের মালদহে কর্মিসভা করে একসঙ্গে চলার বার্তা দিলেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার দুপুরে মালদহ কলেজ অডিটেরিয়ামে উপস্থিত তৃণমূলের সমস্ত নেতা নেত্রীদের উদ্দেশে শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘সকলকে একসঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে। আমরা পুরসভা নির্বাচনে জোটবদ্ধ হয়ে লড়াই করে জেলার দুটি পুরসভা নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও একই ভাবে কাজ করতে হবে।’’
মালদহে তৃণমূলের শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বেড়েছে গোষ্ঠীর সংখ্যাও। দলের শুরু থেকে তৃণমূলের সক্রিয় নেতা ছিলেন দুলাল সরকার(বাবলা)। এর পর একে একে যোগ দেন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র, মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, তাঁরা পৃথক গোষ্ঠী তৈরি করে দলের কাজকর্ম শুরু করেন। জেলাতে যে দলের একাধিক গোষ্ঠী রয়েছে তা অজানা নয় খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।
তিনি লোকসভা ভোটের আগে মালদহে এসে সমস্ত গোষ্ঠীর নেতাদের নাম ধরে ধরে একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়ে গিয়েছিলেন। তবে লোকসভা ভোটে জেলার দুটি কেন্দ্রেই ভরাডুবি হয়েছিল তৃণমূলের। সেই দায় নিয়েই প্রকাশ্যে আসে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এরপরেই জেলা সভানেত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রকে। সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রের পরাজিত প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেনকে। তিনি যোগ দেওয়ার পরেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আঁচ কমেনি। এরপরেই জেলার পর্যবেক্ষক করা হয় সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীকে।
এ দিন শুভেন্দুবাবু ফের একই বার্তা দেওয়ায় পিছনে যথেষ্ট তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করছেন দলের একাংশ। কারণ, সম্প্রতি দলে যোগ দিয়েছেন কোতুয়ালি পরিবারের অন্যতম সদস্য তথা বিধায়ক আবু নাসের খান চৌধুরী। তাঁকে ঘিরে জেলাতে আরএ একটি গোষ্ঠীর মাথাচাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন রাজনৈতিক দলের নেতাদের অনেকেই। তাই ফের শুভেন্দুবাবুর একসঙ্গে চলার বার্তা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল । এদিন পৃথক পৃথক ভাবে দলের সমস্ত শাখা সংগঠন গুলির সঙ্গে বৈঠক করেন শুভেন্দু বাবু।
পরিবারের কোন বিরোধী দলের সদস্য থাকলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা কর্মীদের বোঝানোর পরামর্শ দিলেন সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার বেলা ১টা নাগাদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মিসভায় টিএমসিপি নেতৃত্বের উদ্দেশে এমনই পরামর্শ দেন সাংসদ শুভেন্দু বাবু। তিনি বলেন, ‘‘কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করবেন,আর বাড়িতে গিয়ে সিপিএম,কংগ্রেস,বিজেপির সঙ্গে থাকবেন তা চলবে না। পরিবারের বিরোধী সদস্য থাকলে তাঁদেরকে বোঝাতে হবে। রাজ্যের উন্নয়নের কথা বলে দলে টানতে হবে পরিবারের সদস্যদের।’’