প্রতিবাদ: ইংরেজবাজার শহরে শিক্ষকদের মৌনী মিছিল। নিজস্ব চিত্র। রায়গঞ্জে নাগরিক সমাজের ব্যানারে মিছিলের ভিডিও দেখুন অ্যাপে।
প্রিসাইডিং অফিসার রাজকুমার রায়ের মৃত্যু নিয়ে এ বারে আন্দোলনে নামল বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সঙ্ঘ। রাজকুমারকে খুন করা হয়েছে, এই অভিযোগে বুধবার সংগঠনের একদল সদস্য রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় মৌনী মিছিল উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক ও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।
সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক উত্তমকুমার দে ও জেলা সভাপতি পুলকপতি ত্রিবেদী জানিয়েছেন, রাজকুমারের মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত, তাঁর স্ত্রীকে সরকারি চাকরি, নির্বাচন কমিশনের তরফে রাজকুমারের পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও ভবিষ্যতে সমস্ত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোটকর্মীদের নির্বাচনের ডিউটিতে পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে।
অন্য দিকে, ভোটকর্মী শিক্ষকদের আন্দোলন চলাকালীন রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক থেণ্ডুপ নামগিয়েল শেরপার উপর হামলা চালানোর অভিযোগে ধৃত দুই শিক্ষকের নিঃশর্ত মুক্তি, ওই মামলায় সমস্ত অভিযুক্ত শিক্ষকদের উপর থেকে মামলা প্রত্যাহার ও মৃত্যুর সিবিআই তদন্তের দাবিতে এ দিন সন্ধেয় শহরের বিদ্রোহীমোড় থেকে শিলিগুড়িমোড় পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করেন শিক্ষক, সরকারি কর্মী ও বাসিন্দাদের একাংশ। নাগরিক সমাজের ব্যানারে ওই মিছিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকেরা যোগ দেন। আন্দোলনকারীদের তরফে প্রিয়রঞ্জন পালের অভিযোগ, ওই মিথ্যা মামলায় পুলিশি ধরপাকড়ের ভয়ে শিক্ষকেরা আতঙ্কে রয়েছেন। জেলাশাসক আয়েশা রানির দাবি, সিআইডি তদন্ত করছে। রাজ্য সরকার মৃতের স্ত্রীকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহের দাবি, পুলিশ আইন মেনেই কাজ করছে
গত ১৪ মে ভোট চলাকালীন ইটাহার ব্লকের সোনারপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৮ নম্বর বুথ থেকে নিখোঁজ হয়ে যান প্রিসাইডিং অফিসার রাজকুমার রায়। তাঁকে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বুধবার অবরোধ শুরু করেন শিক্ষকদের একাংশ। প্রশাসন ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চাইছে এই অভিযোগে মহকুমাশাসককে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে।
ঘটনার পরে সাত শিক্ষকের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় প্রায় দেড়শো জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মহকুমাশাসককে মারধর ও জাতীয় সড়ক অবরোধের অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় দু’টি পৃথক মামলা দায়ের হয়। ১৯ মে রাতে পুলিশ মনোজ ভৌমিক ও প্রদীপকুমার সিংহ নামে দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করে। রবিবার রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালত তাঁদের জামিনের আবেদন নাকচ করে চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।