তাঁকে দেখলে স্কুলের ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকেরা সসম্ভ্রমে ঝুঁকে প্রায় অভিবাদন জানান। সেই ‘ডিরেক্টর স্যার’ অঞ্জন চক্রবর্তী কলকাতায় এক বধূকে গাড়িতে তুলে পালানোর চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন শুনে স্তম্ভিত শিলিগুড়ির শিক্ষা মহলের অনেকেই। ধৃত অঞ্জনবাবুর অশীতিপর বাবা-মা ঘটনার পরে ভেঙে পড়েছেন। তাঁদের ধারণা, কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। তাঁরা ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন, তাঁদের ছেলে নৈশপার্টিতে গেলেও এমন ঘটনা কখনও ঘটাতে পারে না। পুলিশি তদন্তে সত্য বেরিয়ে আসবে বলে ধৃতের পরিবারের সকলেরই আশা। বাড়ির কেউই ‘বিচারাধীন’ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
স্কুলের কর্মী-শিক্ষকদের কয়েক জন জানান, ধৃত ‘স্যার’ পরিচালক হলেও বেশির ভাগ সময়েই কলকাতায় থাকতেন। ফলে, স্কুলের উপরে এর তেমন প্রভাব পড়বে না বলে তাঁদের দাবি। যদিও ঘটনাটি জানাজানি হতেই অভিভাবকদের একাংশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তাঁরা স্কুলে ফোন করে বোঝার চেষ্টা করছেন, ঠিক কী হয়েছে। কয়েক জন অভিভাবক জানান, সরাসরি স্কুলের সঙ্গে ঘটনার কোনও যোগসূত্র নেই। কিন্তু, স্কুলের কর্ণধার যদি এমন গুরুতর অভিযোগে গ্রেফতার হন তা হলে দুশ্চিন্তা হওয়া স্বাভাবিক, দাবি এক অভিভাবকের। শিলিগুড়ির সেবক রোডের ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া এলাকায় ওই নামী আবাসিক স্কুলটি রয়েছে। এক দিকে ছেলেদের জন্য, অন্য দিকে মেয়েদের জন্য পৃথক স্কুল ও হস্টেল। স্কুল সূত্রের খবর, অঞ্জনবাবুরা দু’ভাই। তাঁর ছোট ভাই ছেলেদের স্কুলের দায়িত্বে। মেয়েদের স্কুলটি দেখেন অঞ্জনবাবু। ইদানীং কলকাতায় একটি আর্ট গ্যালারি করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন তিনি।
অনেকেই বিষয়টি নিয়ে কলকাতায় খবরাখবর নিয়েছেন। ওই পরিবারের পরিচিতদের কয়েক জন জানান, কাজকর্মের পাশাপাশি হই হুল্লোড়ে অভ্যস্ত অঞ্জনবাবু। বর্ষবরণের রাতে অন্য গাড়ির সঙ্গে অঞ্জনের গাড়ির ধাক্কা লাগার পরে ঠিক কী কী হয়েছে, তা নিয়ে বিশদে তদন্ত দরকার বলে তাঁরা মনে করেন। দীর্ঘ দিন ধরে অঞ্জনবাবুকে চেনেন এমন একজন ক্রীড়া প্রশিক্ষক বলেন, ‘‘অন্য গাড়ির সঙ্গে ধাক্কার পরে নেমে পড়া উচিত ছিল অঞ্জনের।’’ বিষয়টি মিটিয়ে নিলেই এত দূর গড়াত না।’’