তরুণীর অপমৃত্যু, যুবকের বাড়িতে আগুন দিল জনতা

এক তরুণীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শনিবার সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত ধুন্ধুমার চলল ফালাকাটার রাইচেঙ্গা গ্রামে। এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ ওই গ্রামের অর্পিতা মল্লিক (২৫) নামে এক তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ফালাকাটা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৫ ০১:৫৩
Share:

জ্বলছে বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

এক তরুণীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শনিবার সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত ধুন্ধুমার চলল ফালাকাটার রাইচেঙ্গা গ্রামে। এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ ওই গ্রামের অর্পিতা মল্লিক (২৫) নামে এক তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সপ্তাহ খানেক আগে অর্পিতা পড়শি যুবক রাজেশ মাহাতোর সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল। দু’জনে বিয়ে করবে বলে বাড়িতে জানিয়েছিল বলে অর্পিতার পরিবারের দাবি।

Advertisement

পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে রাজেশ, অর্পিতাকে নিয়ে ফালাকাটা থানায় গিয়ে, বিয়ে করবে না বলে জানায়। সারা রাত দু’জনকেই থানায় রেখে এ দিন সকালে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়। আদালত থেকে দু’জনেই জামিন পান। বাড়ি ফিরে অপমানে অর্পিতা আত্মঘাতী হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। তাঁর দেহ উদ্ধার হওয়ার পরেই বাসিন্দাদের একাংশ রাজেশের বাড়িতে চড়াও হয়। তাঁদের বাড়ি ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেয়। বিক্ষোভের জেরে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পুলিশ বা দমকল গ্রামে ঢুকতে পারেনি। তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন দু’জনের সম্পর্ক থাকলেও পরিবারের চাপেই যুবক বিয়েতে অস্বীকার করেছে। যুবকের বাবা এলাকার বড় ব্যবসায়ী। তরুণীর পরিবারের প্রশ্ন, কেন অর্পিতাকে সারা রাত থানায় আটকে রাখা হল। আট দিন এক সঙ্গে থাকার কথা জানিয়ে বিয়েতে অস্বীকার করলেও, কেন পুলিশ যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করল না, কেনই বা তাঁদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়নি?

আলিপুরদুয়ারের এসডিপিও অম্লান ঘোষের দাবি, ‘‘থানা কোথাও হস্তক্ষেপ করেনি। যুবতী অভিযোগ করতে পারে বলেই তাঁকে থানায় রাখা হয়েছিল।’’ কিন্তু কেন পুলিশ তাদের আদালতে পাঠাল তার কোনও স্পষ্ট উত্তর পুলিশকর্তাদের থেকে মেলেনি। ফালাকাটা থানা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, রাতে ছেড়ে দিলে দু’জনে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারে এই আশঙ্কায় থানায় রাখা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে ৪১ নম্বর ধারা দায়ের করা হয়েছিল।

Advertisement

মাস্টার ডিগ্রি করে অর্পিতা ইদানিং চাকরির খোঁজ করছিলেন। পড়শি যুবক বাড়ির ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। অর্পিতার মা গীতাদেবী বলেন, ‘‘ বিয়েতে আমাদের অমত ছিল না। কিন্তু ছেলের পরিবার মেনে নিতে পারেনি। রাতে যখন ওরা থানায় গেল তখন পুলিশ ছেলেকে কিছু না বলে উল্টে আমার মেয়েকেও কেন আটকে রাখল বুঝলাম না।’’

পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুদ্ধ এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যও। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য চঞ্চল অধিকারীর প্রশ্ন, ‘‘পুলিশ কোন আইনে অর্পিতাকে রাতভর থানায় আটকে রাখল তা বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন