গুরুঙ্গকে দেখে চিন্তায় পাহাড়বাসী

উন্নয়ন-উৎসবকে হাতিয়ার করে পাহাড়বাসীকে কাছে টানতে আসরে বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপারা। এমন সময়ে বিমল গুরুঙ্গ জনসমক্ষে হাজির হওয়ায় পাহাড়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে পাহাড়েরই জনজীবনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৪
Share:

টানা বন্‌ধের ধাক্কা কাটিয়ে চেনা ছন্দে ফিরতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে দার্জিলিং পাহাড়। উন্নয়ন-উৎসবকে হাতিয়ার করে পাহাড়বাসীকে কাছে টানতে আসরে বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপারা। এমন সময়ে বিমল গুরুঙ্গ জনসমক্ষে হাজির হওয়ায় পাহাড়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে পাহাড়েরই জনজীবনে।

Advertisement

পাহাড়ের আমজনতার একটা বড় অংশ চান, উন্নয়ন জারি রেখে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই এগোতে। তাঁরা গুরুঙ্গের কট্টরপন্থী মনোভাবের বিরোধী। কিন্তু, সাধারণ মানুষের যে অংশটি এখনও বিনয়-অনীতকে মেনে নিতে পারেননি, তাঁরা গুরুঙ্গকে আবারও পাহাড়ের প্রশাসক পদেই দেখতে চান। এই টানাপড়েনে শীতের সময়ে খানিকটা যেন উষ্ণ হয়ে উঠেছে দার্জিলিঙের জনজীবন।

ম্যাল চৌরাস্তার চায়ের আড্ডা, কেভেন্টার্সের কফি টেবিল বা গ্লেনারিজের পানশালা, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সর্বত্রই একই আলোচনা, ‘আইনি বাধা কাটিয়ে কি গুরুঙ্গ ফিরবেন পাহাড়ে?’ ব্যবসায়ী, হকার কিংবা স্কুল শিক্ষক, আলাদা ভাবে হলেও সকলেই প্রায় একই সুরে জানিয়েছেন, আন্দোলনের নামে কোনও রক্তারক্তি, আগুন লাগানোর পুনরাবৃত্তি যে পাহাড় চায় না, সেটা গুরুঙ্গও বুঝেছেন। ক্লাবসাইড রোডে যেখানে একদা বিমল গুরুঙ্গের মুখোশ খুলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জনসভার সময়ে গোর্খা লিগ নেতা মদন তামাঙ্গ খুন হয়েছিলেন, সেখানে দাঁড়িয়ে একদল গাড়ির চালক জানান, খুনোখুনির রাজনীতিতে আমজনতার শুধু ক্ষতিই হয়। ১০৪ দিনের বন্‌ধে সেটা ভাল ভাবেই বুঝতে পেরেছেন পাহাড়ের মানুষও। তাঁরা জানান, গুরুঙ্গ দীর্ঘদিন নিরুদ্দেশ থাকা সত্ত্বেও পাহাড়ের জনজীবন ছন্দে ফিরেছে। সেই ছন্দ নষ্টের চেষ্টা হলে পাহাড়ের অর্থনীতি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে পড়বে। বস্তুত, এই আশঙ্কা শুধু গাড়ি ব্যবসায়ীদের একার নয়, গোটা পর্যটন ব্যবসায়ী মহলে। পাহাড়ের দোকানদার, হোটেল মালিকরাও চিন্তায় পড়েছেন। এখনও বিনয়-অনীতের প্রশাসক হওয়া যাঁরা মেনে নিতে পারেননি, সেই পাহাড়বাসীদের সংখ্যা যা-ই হোক, তাঁরা কিন্তু বরাবরই দাবি করছেন, গুরুঙ্গের ফেরাটা সময়ের অপেক্ষা। তাঁরা মনে করেন, গুরুঙ্গ ফিরলে এ বার রাজ্যের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা না করে জিটিএ-কে হাতে নিয়েই এগোবেন।

Advertisement

তবে বিস্তর মামলা এড়িয়ে গুরুঙ্গের ফেরা যে বেশ কঠিন, একান্তে সে কথাও মানছেন গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ কয়েক জন আইনজ্ঞ। কিন্তু, এখনই হাল ছাড়তে নারাজ তাঁরা।

এই শৈত্য প্রবাহের মধ্যে তাই গুরুঙ্গ-হাওয়ায় তপ্ত দার্জিলিং।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement