ঘোষণাই সার, পাঁচ বছরেও গঙ্গারামপুরে হয়নি তাঁত হাব

এখনও পর্যন্ত মাত্র একটি বিল্ডিং নির্মাণের কাজ চলছে। বাকি কাজ কবে শেষ হবে, তা নিয়ে কার্যত ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৮ ০৮:৩০
Share:

হতাশ তাঁতশিল্পীরা। —ফাইল ছবি

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের বিখ্যাত তাঁতশিল্পকে নতুন জীবন দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গারামপুরে এই ‘তাঁত হাব’ তৈরির ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু ঘোষণার পাঁচ বছর পরেও তা তৈরি না হওয়ায় তাঁতশিল্পীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, এই জেলার কারিগরেরা সঠিক প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে, প্রতিযোগিতার বাজার ধরে রাখার মতো পরিকাঠামো না থাকায় তারা সঙ্কটে পড়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তাঁত সুরক্ষা সমিতির সম্পাদক রামগোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন এখানে ‘তাঁত হাব’ তৈরি করে কারিগরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। থাকবে তাঁত ব্যাঙ্কও। কিন্তু আজও সেই কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। ফলে এই জেলার কারিগরেরা ব্যবসায়িক দিক থেকে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’’

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, গঙ্গারামপুরের তাঁতশিল্পের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখেই সেখানে ‘তাঁত হাব’ তৈরির ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ জন্য প্রাথমিক প্রায় ১৫ কোটি টাকাও বরাদ্দ করা হয়। হাবের জন্য গঙ্গারামপুরের ঠ্যাঙাপাড়ায় প্রায় এক একর জায়গাও দেখা হয়। পরিকল্পনা করা হয়, তাঁত হাবে থাকবে উন্নতমানের ডিজ়াইন মেশিন। থাকবে শাড়িতে এমব্রয়ডারি করার মেশিনও। এ ছাড়াও, রং করার কৌশল শেখানোর ব্যবস্থা থাকবে। আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে কারিগরদের আধুনিক ডিজ়াইনের শাড়ি তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ ছাড়াও, উৎপাদিত শাড়িগুলি যাতে শিল্পীরা মজুত রাখতে পারেন, সে জন্য তাঁত ব্যাঙ্ক তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়। যাতে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সঠিক সময়ে ব্যবসায়ীরা এই শাড়িগুলি বাজারে বিক্রি করতে পারেন। এই উদ্দেশ্যে কাজ শুরুর জন্য পরবর্তীতে ধাপে ধাপে রাজ্য সরকার মোট প্রায় ৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করে বলে হ্যান্ডলুম দফতর সূত্রে খবর। কিন্তু আজও সেই হাব তৈরির কাজ শেষ হয়নি। এখনও পর্যন্ত মাত্র একটি বিল্ডিং নির্মাণের কাজ চলছে। বাকি কাজ কবে শেষ হবে, তা নিয়ে কার্যত ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

হ্যান্ডলুম দফতরের জেলা আধিকারিক প্রদীপ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’’ এ দিকে, এই জেলার তাঁতশিল্পীরা পরিকাঠামোগত অসুবিধা ও আধুনিক প্রশিক্ষণের অভাবে চরম বিপাকে পড়েছেন। তাঁরা যেমন আধুনিক ডিজ়াইনের, সময়োপযোগী শাড়ি উৎপাদন করতে পারছেন না, তেমনই শাড়ি বিক্রি করে তাঁদের উৎপাদনের খরচও উঠছে না। ফলে, কার্যত ক্ষতির মুখে পড়ছেন তাঁরা। যে জন্য প্রতিদিন একজন করে তাঁতশিল্পী এই পেশা ছাড়ছেন। এই অবস্থায় জেলার এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে দ্রুত হাবের কাজ শেষ করার
দাবি উঠেছে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন