Elephants

হাতি ঠেকাতে কলাগাছে ভরসা বন দফতরের

ঘুম উড়ে যায় জঙ্গল লাগোয়া বাসিন্দাদের, এই বুঝি উঠোনে এসে দাঁড়াল মূর্তিমান। বছরভর জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে খাবারের খোঁজে ঢুকে পড়ে হাতির দল।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২০ ০৩:২৯
Share:

ছবি এএফপি।

ধান পাকার গন্ধ বাতাসে ভাসলেই গ্রামে এসে হাজির হয় বুনোর দল। ভুট্টায় রং ধরলেও খেতে ঢুকে পড়ে তারা। গরম কালে কাঁঠালের গন্ধ গ্রাম ম ম করলে রাতের

Advertisement

ঘুম উড়ে যায় জঙ্গল লাগোয়া বাসিন্দাদের, এই বুঝি উঠোনে এসে দাঁড়াল মূর্তিমান। বছরভর জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে খাবারের খোঁজে ঢুকে পড়ে হাতির দল। হাতির ভয়ে কোনও কোনও গ্রামে ধান ছেড়ে হলুদ-আদা চাষ শুরু হয়েছে। তাতেও কাজ হয়নি, হাতি এসে স্কুলের, বাড়ির রান্নাঘর ভেঙে চাল খেয়েছে। মৌমাছির গুঞ্জন শুনিয়ে হাতিকে লোকালয়, রেললাইন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা হয়েছিল। তাতেও ফল মেলেনি বলে বন দফতরের দাবি। এ বার কলাগাছে ভরসা রাখছে বন দফতর। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে হাতি যে সব রাস্তা ধরে, তার দু’পাশে কলাগাছ লাগাবে বন দফতর। আধিকারিকদের আশা, চলার পথেই যদি কলা এবং কলাগাছ খেয়ে হাতির পেট ভরে যায় তাহলে তারা আর গ্রামে ঢুকবে না।

এ বছরের অরণ্য সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে কলাগাছের চারা রোপণ। জঙ্গলের খাবারে খিটে না মিটলে তবেই বুনোরা লাগোয়া গ্রামগুলিতে ঢুকে পড়ে বলে বন আধিকারিকদের মতামত। যে বন্যপ্রাণীরা সচরাচর গ্রামে ঢোকে তাদের মধ্যে হাতিই প্রধান। বাইসন, চিতাবাঘ যতটা গ্রামে ঢোকে তার থেকে হাতিদের লোকালয়ে ঢুকে যাওয়ার সংখ্যা এবং প্রবণতা দুইই বেশি। জলপাইগুড়ির ডিএফও মৃদুল কুমার বলেন, “এ বছর জঙ্গলের ভেতরেও গাছ লাগানো হবে। গভীর জঙ্গলে আম, জাম, লিচু গাছ লাগানো হবে। হাতি করিডরের চারপাশে প্রচুর কলাগাছ লাগানো হবে। যাতায়াতের রাস্তায় খাবার পেয়ে গেলে হাতি আর গ্রামে ঢুকবে না।”

Advertisement

বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, অন্তত ২ লক্ষ চারাগাছ লাগানো হবে। কলাগাছের দাম খুব একটা বেশি নয়, তাই সহজেই হাতি করিডরগুলি কলাগাছে ঘিরে দেওয়া যাবে বলে দাবি। যদিও এই পদ্ধতিতে কতটা কাজ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এক প্রবীণ বনকর্মীর কথায়, “হাতি কী প্রতিদিন কলাগাছের পাতাই চিবোবে নাকি! আমাদের প্রতিদিন ডাল-ভাত খেতে দিলে আমরা খাব কি? কলাগাছ পেলেও স্বাদ বদল করার জন্য হাতির দল মাঝেমধ্যে আশেপাশের গ্রামে ঢুকতেই পারে। সতর্ক থাকাটাই আসল কথা।” পুরোপুরি না বন্ধ হলেও আসা যাওয়ার পথে কলাগাছ খাইয়ে হাতির গ্রামে ঢোকায় কিছুটা লাগাম টানা যাবে বলে আশাবাদী বনকর্মীদের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন