‘মানুষখেকো! এত সহজ নাকি’

চার চা বাগানে তিনটি শিশু-কিশোরকে মৃত্যুর জন্য কি একটি চিতাবাঘই দায়ী? সেই চিতাবাঘটিকে কি মানুষখেকো বলে ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার? বুধবার বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণের কথায় এই নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মাদারিহাট শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:২১
Share:

চার চা বাগানে তিনটি শিশু-কিশোরকে মৃত্যুর জন্য কি একটি চিতাবাঘই দায়ী? সেই চিতাবাঘটিকে কি মানুষখেকো বলে ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার? বুধবার বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণের কথায় এই নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমি প্রাণীহত্যার বিরোধী। মেরে ফেলার নির্দেশ দেওয়া ও কার্যকর করার আগে আমি দশবার ভাবতে চাই।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কোন চিতাবাঘ মানুষখেকো, আর কোনটি নয়— সেটিও সুস্পষ্ট হওয়া জরুরি। এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতেই কলকাতায় যাচ্ছি।”

Advertisement

মাদারিহাট ব্লকের ধুমচিপাড়া, গ্যারগেন্ডা, রামঝোরা এবং তুলসীপাড়া— মূলত এই চার চা বাগানে গত কয়েক মাস ধরে পরের পর হামলা হচ্ছে সাধারণ বাসিন্দাদের উপরে। সকলেরই দাবি, এর পিছনে কারসাজি একটি চিতাবাঘের। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে চিতাবাঘটি মেরে ফেলার জন্য একটি ফরমান জারি হয়েছে বলে সম্প্রতি বন দফতরের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে।

বুধবার এই খবর জানাজানি হতেই রাজ্য বন ও পরিবেশবিদদের মধ্যে আলোড়ন পরে যায়। ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “কোন চিতাবাঘ মানুষখেকো, সেটাই তো এখনও শনাক্ত হয়নি। আর তা ছাড়া গুলি করে মেরে ফেলা সম্ভব হলে ঘুমপাড়ানি ডার্ট কেন ছোড়া যাবে না, সেটাই বুঝতে পারছি না।” ডুয়ার্স জুড়ে চিতাবাঘ-মানুষ সংঘাত রোধ করতে কাজ করেন বন্যপ্রাণ জীববিদ্যার গবেষক অরিত্র ক্ষেত্রি। তিনি নিজেও মাদারিহাটের চার চা বাগানে গিয়ে নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন। তিনি বলেন, “চিতাবাঘের মৃত্যু ফরমান জারির বিষয়টি শুনেছি। তবে কী ভাবে এটি কার্যকর করার কথা বন দফতর ভেবেছে, তা বুঝতে পারিনি।”

Advertisement

মানুষের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক চিতাবাঘ যে এলাকায় ঘুরছে, তা জানিয়ে এর মধ্যেই বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে মোবাইলে বার্তা পাঠানোও শুরু করেছে বনদফতর। সেই বার্তা পৌঁছে গিয়েছে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীর কাছেও। তিনি বলেন, “বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করেই বন দফতর যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে। আমরা চা শ্রমিকদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে বলছি।”

কিন্তু সত্যিই কি মানুষখেকো চিতাবাঘকে শনাক্ত করা গিয়েছে? মন্ত্রী বলেন, ‘‘এত সহজ নাকি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন