শহরের অমানবিক মুখ নিয়ে প্রশ্ন

শিলিগুড়ির নাগরিক সংগঠনের কর্তা তথা আইনজীবী রতন বণিক বলেন, ‘‘কিছু হাসপাতালে গিয়ে দেখেছি, অসহায়ভাবে ছোটাছুটি করছেন অসুস্থরা। জেলা হাসপাতাল তেকে মেডিক্যাল সব জায়গায় রোগী সহায়তা কেন্দ্র থাকলেও কর্মীরা ঘরে বসে থাকলে লাভ হবে না। বাইরে ঘুরে তদারকি করে রিপোর্ট দিতে হবে।’’

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী ও সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৭ ০৩:৩৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

নিঃসঙ্গ কিংবা সহায়-সম্বলহীন রোগী-রোগিণীদের যাতে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা পেতে হয়রানি না হয়, সে জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে বাড়তি নজরদারির দাবি তুলল একাধিক সংগঠন। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি হাসপাতালে এক বৃদ্ধা গাড়ি রাখার জায়গায় দীর্ঘ সময় পড়ে তাকার ঘটনা সামনে আসতেই সরব হয়েছে তারা। আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি থেকে কোচবিহার, সর্বত্রই একই আওয়াজ উঠেছে। প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীদেরও পর্য়ায়ক্রমে হাসপাতালে সহায়ক হিসেবে রাখা যায় কি না তা নিয়েও চিন্তাভাবনার প্রয়োজন বলে মনে করছে সংগঠনগুলি।

Advertisement

শিলিগুড়ির নাগরিক সংগঠনের কর্তা তথা আইনজীবী রতন বণিক বলেন, ‘‘কিছু হাসপাতালে গিয়ে দেখেছি, অসহায়ভাবে ছোটাছুটি করছেন অসুস্থরা। জেলা হাসপাতাল তেকে মেডিক্যাল সব জায়গায় রোগী সহায়তা কেন্দ্র থাকলেও কর্মীরা ঘরে বসে থাকলে লাভ হবে না। বাইরে ঘুরে তদারকি করে রিপোর্ট দিতে হবে।’’

আলিপুরদুয়ার অভিভাবক মঞ্চের তরফে ল্যারি বসু মনে করেন, প্রতিটি হাসপাতাল চত্বরে, বর্হিবিভাগে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে টানা নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। কোচবিহারের নাগরিক সমিতি জানায়, তারাও বাড়তি নজরদারির আর্জি জানাবেন।

Advertisement

জলপাইগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাসপাতালের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। অথচ হাসপাতাল চত্বরে পড়ে থাকা এক ব্যক্তি তার কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার লোক যদি না থাকে তা হলে তো মুশকিল। মনবিকতা বোধ কতটা কাজ করছে তা নিয়েই তো প্রশ্ন উঠবে।’’

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারের দায়িত্বে থাকা মৃদুময় দাসও ঘটনার কথা শুনেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের হাসপাতালে করিডরে ভবঘুরে কত জনের খাওয়ার, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হয় শুধু তাই নয় নজরও রাখা হয় তাদের কারও কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না।’’ তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতাল চত্বরে কেউ পড়ে থাকলে তো কর্তৃপক্ষকেই দেখতে হবে। কাউকে দায়িত্ব দিতে হবে। এমন কিছু নজরে আসলে যাতে তাঁকে খবর দেওয়া হয়। তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন।’’ শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অভিজিৎ মজুমদারও সামগ্রিক পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘‘এই ধরণের ঘটনা প্রথম তো অমানবিকতার নমুনা। শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’’ তবে সুপার, প্রিন্সিপালদের সময় না থাকলেও স্বাস্থ্যকর্মীদের করিডর, বারান্দা, শেডে কারা কেন পড়ে রয়েছে তা খেয়াল রাখতে হবে বলে অভিজিৎবাবুর মত। জলপাইগুড়ি প্রসন্ন দেব মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শান্তি ছেত্রী বলছেন, ‘‘হাসপাতালে প্রতিদিন এত লোক যান৷ অথচ কেউ বিষয়টা দেখলেন না৷ সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন