মন্দিরের দরজার তালা ভেঙে নগদ টাকা এবং রুপোর বাসন ও সোনার জল করা অলঙ্কার চুরি হল। শনিবার গভীর রাতে মালবাজার পুর এলাকার তিন নম্বর ওয়ার্ডের শিবোহম বালাজি মন্দিরে এই চুরির ঘটনার ফুটেজ মিলেছে গোপন ক্যামেরায়।
এলাকায় হনুমান মন্দির হিসাবে পরিচিত উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত এই মন্দিরে চুরির ঘটনায় রবিবার আলোড়ন পড়ে যায় মালবাজার শহরে। মন্দির কমিটির ট্রাস্ট সভাপতি দেবীপ্রসাদ অগ্রবাল জানান, তিনটি দান বাক্স ভেঙে টাকা বের করে নেয় দুষ্কৃতীরা। এছাড়া পুজোতে ব্যবহৃত তিনটি ভারী রুপোর থালা এবং সোনার জল করা বেশ কিছু রুপোর অলঙ্কারও চুরি হয়েছে। নগদ এবং সম্পত্তি মিলিয়ে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার জিনিস চুরি হয়েছে বলে দেবীপ্রসাদ অগ্রবাল দাবি করেন। পুরো ঘটনাটির বিস্তারিত বিবরণ জানিয়ে মালবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ৬টা নাগাদ নির্দিষ্ট সময়ে মন্দিরের দুই পুরোহিত মুরারি শর্মা এবং সুনীল মিশ্র দোতলার মূল মন্দিরের বড় দরজার তালা ভাঙা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এরপরেই চুরির বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। মন্দিরের ভেতরে থাকা গোপন ক্যামেরায় দুই যুবককে চুরি করতেও দেখা যাচ্ছে বলে মন্দির কর্তৃপক্ষ জানান। রাত ২টো ০৬ মিনিট থেকে ২টো ৩৫ মিনিট অবধি মুখে কাপড় বাঁধা দুই দুষ্কৃতী মন্দিরের ভেতরে উপস্থিত ছিল বলে ফুটেজে উঠে এসেছে। মন্দিরের মূল সিঁড়িতে আবার তাদের কোনও ফুটেজ না থাকায় পেছন দিয়েই দোতলায় উঠেছিল বলে মনে করছে পুলিশ। নিরাপত্তাকর্মী এবং নৈশকর্মীরা মন্দিরের নীচতলায় থাকায় উপরতলায় চোরেদের উপস্থিতি সম্পর্কে কিছু বুঝতে পারেননি বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে গোপন ক্যামেরার ফুটেজ মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে পুলিশ।
চুরির ঘটনার পরেও মন্দির অবশ্য স্বাভাবিক নিয়মেই রবিবার খোলা রাখা হয়েছিল। এদিনও অনেক দর্শনার্থীই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। তবে, শহরের মন্দিরে চুরির ঘটনায় উদ্বেগ রয়েছেই। মালবাজারের ব্যবসায়ী সংগঠন মার্চেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা মোহিত শিকদারের কথায়, ‘‘শহরের মাঝে এই ভাবে যদি মন্দিরের ভেতরে চুরি হতে পারে, তাহলে কেউই নিরাপদ নয়। আমরা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’’
মালবাজারের এসডিপিও নিমা নরবু ভুটিয়া জানান, চুরির অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।