জলপাইগুড়ি পুরসভা

পুর-বাজেটে বৈচিত্র্য নেই, অভিযোগ

গত বছরের মতো এবারও পরিকাঠামো উন্নয়নের একগুচ্ছ প্রকল্প সামনে রেখে প্রায় ২৯৯ কোটি টাকার বাজেট পাশ হল জলপাইগুড়ি পুরসভায়। মঙ্গলবার তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার ২০১৫-২০১৬ সালের প্রথম বাজেটে তেমন বৈচিত্র্য নেই বলেই নাগরিকদের একাংশের অভিযোগ। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, গত বছর কংগ্রেস পরিচালিত পুর বোর্ড ২৫২ কোটি টাকার বাজেট পাশ করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৫ ০২:৩৮
Share:

গত বছরের মতো এবারও পরিকাঠামো উন্নয়নের একগুচ্ছ প্রকল্প সামনে রেখে প্রায় ২৯৯ কোটি টাকার বাজেট পাশ হল জলপাইগুড়ি পুরসভায়।
মঙ্গলবার তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার ২০১৫-২০১৬ সালের প্রথম বাজেটে তেমন বৈচিত্র্য নেই বলেই নাগরিকদের একাংশের অভিযোগ। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, গত বছর কংগ্রেস পরিচালিত পুর বোর্ড ২৫২ কোটি টাকার বাজেট পাশ করে। এবার সামান্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। প্রকল্পগুলির বেশিরভাগ একই থেকে গিয়েছে। এদিন বিরোধী বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস সদস্যরা সমালোচনার ঝড় তুললেও পুরসভার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে বাজেট সমর্থন করেন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী এক বছরের বাজেটে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে দূষণমুক্ত সবুজ শহর নির্মাণ এবং কর্পোরেশনের পরিকাঠামো তৈরিকে। গত বছরের মতো এ বারেও যেমন একাধিক শিশু উদ্যান তৈরির প্রকল্প রয়েছে। একই ভাবে পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে নতুন সংযোজিত এলাকায় পানীয় জল, পথবাতির বসানোর প্রকল্প। পুরসভা কর্পোরেশনে উন্নীত হলে কর্পোরেট ধাঁচের প্রশাসনিক ভবন, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন বিষয়ে যে পরিকাঠামো প্রয়োজন হবে, বাজেটে সেটাই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বিকল্প রাস্তা নির্মাণ, শহরের বাইরের এলাকায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহ, পাঁচটি নতুন গভীর নলকূপ বসানো, পাঁচটি জলাধার তৈরি, একটি আয়রন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসানো, পাঁচটি সুলভ শৌচালয় তৈরি, সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাল নির্মাণ, সমস্ত জলাশয়কে সংস্কার করে ঢেলে সাজানো, শহরের নিকাশি নালার জল শোধন করে করলা নদীতে ফেলার ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। বিপণন ব্যবস্থাও গুরুত্ব পেয়েছে বাজেটে।

Advertisement

নতুনত্বের মধ্যে রয়েছে সদ্য ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া দিনবাজারের টিন শেড এলাকায় অত্যাধুনিক মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি, পুরসভার গোটা প্রশাসনিক ভাবনে সিসি টিভি বসানো, কর্মীদের হাজিরার জন্য বায়ম্যাট্রিক পদ্ধতি চালু করা, শহরের পাঁচটি প্রবেশ পথে তোরণ নির্মাণ, পর্যটক ও সাধারনের জন্য গেস্ট হাউস তৈরি, ধরধরা নদী সংস্কার, মাছ ও সব্জির পাইকারি বাজার দিনবাজার থেকে। গোশালা মোড় অথবা পাহাড়পুরের কাছে নিয়ে যাওয়া।

পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “জলপাইগুড়ি পুরসভাকে কর্পোরেশন ঘোষণা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। রাজ্য সরকারের স্বপ্ন ১৩০ বছরের প্রাচীন পুরসভাকে পরিকল্পিত ভাবে সাজানো। সবদিক চিন্তা করে এ বার বাজেট তৈরি করা হয়েছে।” পুর কর্তারা জানান, জলপাইগুড়ি শহরকে ঘিরে পর্যটন শিল্প বিকাশের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। ওই কারণে প্রতিটি জলাশয়কে ঢেলে সাজার জন্য প্রকল্প বাজেটে রাখা হয়েছে। করলা নদী বাঁধের ১০ কিলোমিটার এলাকা সাজিয়ে তোলা হবে। এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।

Advertisement

যদিও পুরসভার সিপিএম কাউন্সিলার প্রমোদ মণ্ডলের দাবি, ‘‘এবার বাজেটে উল্লেখযোগ্য নতুন কোন প্রকল্প নেই। গত বছরের প্রকল্পগুলিকে এবারও দেখা গিয়েছে। শাসকদলের পুরসভার কাছে শহরবাসী বেশি কিছু আশা করেছিল। তদের হতাশ হতে হল। ভোটের প্রচারে উন্নয়নের যে সমস্ত আশ্বাসের কথা শুনেছিলাম বাজেট তাঁর কিছুই নেই। শহরের উন্নয়নের স্বার্থে তবু আমরা বাজেট সমর্থন করেছি।” শহরের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক উৎপল সরকার বলেন, “দূষণমুক্ত সবুজ শহর তৈরির কথা অনেকদিন থেকে শুনছি। এ বার বাজেটেও একই কথা!” জেলা যুব বিজেপি সভাপতি জয়ন্ত চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘শুধু রং পাল্টেছে পুরসভা। দাঁড়িয়ে আছে একই জায়গায়।’’

পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “বাজেটে নতুন কিছু নেই। চেয়ারম্যান কর্পোরেশনের জন্য পরিকাঠামো গঠনের কথা মুখে বলেন। বাজেটে তাঁর প্রতিফলন নেই।” যদিও বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “শহরের ছবি অল্প দিনে পাল্টে যাবে। পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। পরিষেবার মান উন্নত করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন