ফের নিয়োগ শুরু বিশ্ববিদ্যালয়ে

ফের নতুন করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে লোক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করল কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় আট মাস আগে ওই পদগুলিতে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সে সময় লিখিত পরীক্ষায় পাশের তালিকা বের হওয়ার পরই শাসকদলের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠে।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৫ ০২:৫৯
Share:

ফের নতুন করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে লোক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করল কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়।

Advertisement

প্রায় আট মাস আগে ওই পদগুলিতে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সে সময় লিখিত পরীক্ষায় পাশের তালিকা বের হওয়ার পরই শাসকদলের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠে। কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মেয়ে, আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ পাঁচজনের নাম তালিকায় রয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সরব হয় ফরওয়ার্ড ব্লক ও বিজেপি।

প্রশ্ন ওঠে, ৫০ নম্বরের পরীক্ষায় কি করে রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ ওই পাঁচজন ৪০ অথবা তাঁর বেশি নম্বর পেল। তা নিয়ে হইচই শুরু হতেই বিপাকে পড়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শেষপর্যন্ত শিক্ষা দফতরের নির্দেশে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়া হয়। তৎকালীন উপাচার্য ইন্দ্রজিৎ রায় অবশ্য দাবি করেছিলেন, দুর্নীতির অভিযোগ ঠিক নয়। বিষয়টি সেভাবে প্রচার না হওয়ায় অনেকে জানতে পারেননি। সে কারণেই তা বাতিল করে দেওয়া হয়।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরুতেই এমন অভিযোগ ওঠায় সরব হন শিক্ষানুরাগীরা। এবার যাতে কোনওরকম অস্বচ্ছ বিষয় না থাকে সে ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি।

কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান উপাচার্য শুভ্রাংশু শেখর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এবারে আমরা চারটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছি। এর মধ্যে বাংলা ছাড়াও ইংরেজি ও হিন্দি সংবাদপত্র রয়েছে। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ করা হবে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবকুমার মুখোপাধ্যায় জানান, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির জন্য ১০ টি পদ রয়েছে। এ ছাড়াও শিক্ষকের জন্য ১৪ টি পদ এবং চারটি প্রশাসনিক পদও রয়েছে। তিনি বলেন, “সবক্ষেত্রেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জুলাই মাসের মধ্যে ওই প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে লোক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। দশটি পদের জন্য আটশোটি আবেদন জমা পড়ে। লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। ২০ অগস্ট লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। এর পরেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে লোক নিয়োগের দাবি করেছি আমরা। এর আগে স্বচ্ছতা ছিল না। শাসক দলের নেতাদের ঘনিষ্ঠদের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল। এবারে তা হবে না বলেই আশা করছি। স্বচ্ছতার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় চলুক তা আমরা চাই।”

বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে অভিযোগ করেন, শাসক দলের নেতারা প্রভাব খাটিয়ে সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে নিজেদের পছন্দের লোককে সুযোগ করে দেওয়ার ছক কষেছিল। তিনি বলেন, ‘‘যোগ্য আবেদনকারীদেরই নিয়োগ করতে হবে। আমরা কাউকে অন্যায় ভাবে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে। এবারে কর্তৃপক্ষ সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন বলে আশা রাখছি।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে চাননি। তিনি বলেন, “ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপার। রাজনীতি করার জন্য অনেকে অনেক কিছু বলছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন