কড়া-নজর: উচ্চ-মাধ্যমিকের প্রথম দিনে শিলিগুড়ির একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে তল্লাশি ঘড়িতেও। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
মোবাইল আছে কিনা তা খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এল রাশি রাশি উত্তর লেখা চিরকুট। কোথাও আবার নকল করা রুখতে শৌচাগারেও ছিল কড়া নজর। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনেই জলপাইগুড়ির দু’টি স্কুলে ঘটেছে এমনই কাণ্ড।
জলপাইগুড়ি শহরের অন্যতম প্রাচীন একটি ছেলেদের স্কুলে এ বছর প্রায় সাড়ে ছ’শো পরীক্ষার্থীর আসন পড়েছে। শহরের বাইরের কয়েকটি স্কুলের পড়ুয়ারা এই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। স্কুলের শৌচাগার রয়েছে ভবনের পিছন দিকে। পরীক্ষার সময় সেখানেও ডিউটি পড়েছে স্কুলের দুই কর্মীর। কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, কাগজে-কলমে নির্দেশ দিয়ে শৌচাগারে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে কর্মীদের।
কেন এমন সিদ্ধান্ত?
শিক্ষকদের একাংশের দাবি, শৌচাগারে গিয়ে নকল করার প্রবণতা বহুদিনের। সেই সঙ্গে এ বছর মোবাইল নিয়ে কড়াকড়ির নির্দেশ রয়েছে। এই স্কুলের সামনে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির ব্যবস্থা ছিল না। লুকিয়ে কেউ মোবাইল নিয়ে এসে শৌচাগারে ব্যবহার করতে পারে এই আশঙ্কা থেকেই সেখানে নজরদারির ব্যবস্থা হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কথায়, “আরও একটি কারণ রয়েছে। অনেকে ক্লাসে নকল করতে না পেরে বা প্রশ্নের যথাযথ উত্তর না লিখতে পেরে হতাশ হয়ে শৌচাগারে গিয়ে ভাঙচুর করে। তাতে অনেক টাকার ক্ষতি হয়। সেটাও তো রক্ষা করতে হবে।”
এ দিন পরীক্ষার্থীদের ঢোকার সময় মোবাইলের খোঁজে কড়া তল্লাশি চলেছে শহরঘেঁষা শেষবাতি লাগোয়া একটি স্কুলে। কিম্তু মোবাইল খুঁজতে গিয়ে চোখ গোল দায়িত্বপ্রাপ্তদের। পরীক্ষার্থীর কারও পকেট থেকে বেরিয়েছে গোল্লা পাকানো কাগজ আবার কারও পকেটে ছিল মুদির দোকানের ফর্দের মতো লম্বা কাগজ। ওই স্কুলের এক শিক্ষকের কথায়, “মোবাইলের খোঁজ চালাতে গিয়ে পেলাম পরিবেশ, প্লাস্টিক, বিজ্ঞাপনের রচনা লেখা চিরকুট। তবে জনাকয়েকের পকেট থেকেই মিলেছে।’’ তবে বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীই নিয়ম মেনে পরীক্ষা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
এ দিন সংসদের তরফে দাবি করা হয়েছে জলপাইগুড়িতে পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই হয়েছে। পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম আহ্বায়ক অমিত সাহা বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবে পরীক্ষা হয়েছে। কোনও অভিযোগ নেই।” শহরের সবকটি স্কুল থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মোবাইল নিয়ে আসতে বারণ করা হয়েছিল। দু’টি ক্ষেত্রেই স্কুলের নাম প্রকাশ করতে আপত্তি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মন্তব্য, “সংবাদপত্রে স্কুলের নাম লেখা হলে রাগ আরও বাড়বে। স্কুলে ভাঙচুর না হয়ে যায়।”