মিরিকে পুলিশ আউটপোস্টে আগুন বন্ধ সমর্থকদের। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
দুই আদিবাসী নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও তিন যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ রায়গঞ্জের রেল স্টেশন ও মোহনবাটী এলাকা থেকে তাদের ধরা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম বিজয় দাস, চন্দন দত্ত ও জয়ন্ত দাস। তাঁদের বাড়ি ইটাহার থানার কুকড়াকুন্ডা, রায়গঞ্জ থানার সুভাষগঞ্জ ও শ্যামপুর এলাকায়। এই নিয়ে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
তাদের মধ্যে নবীন শীল, শুভম প্রসাদ ও উত্পল চাকি নামে রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। গত ৯ জুলাই থেকে পুলিশ হেফাজতে ছিল। ওই মামলায় গত রবিবার উকিলপাড়া এলাকা থেকে পেশায় গাড়ি চালক পান্না সরকার নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বাড়ি কোচবিহারের ভাগনি এলাকায় হলেও সে উকিলপাড়া এলাকায় ভাড়া থাকত। এদিন ধৃত সাতজনকে রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌরের দাবি, ধৃতদের শনাক্তকরণের জন্য আদালতে টিআই প্যারেডের অনুমতি দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। সেই অনুমতি মিললে নির্যাতিতা দুই নাবালিকা ধৃতদের শনাক্তকরণ করবে।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই করণদিঘির বাসিন্দা দুই আদিবাসী নাবালিকা করণদিঘিগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল। সেই সময় একদল দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে খুনের হুমকি দিয়ে প্রথমে বাসস্ট্যান্ডের দোতলায় ও পরে বাসস্ট্যান্ডের বাইরের একটি পানশালার উপরে নিয়ে গিয়ে তাদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা ও সমস্ত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে গত শুক্রবার কয়েক হাজার আদিবাসী রায়গঞ্জ পুর বাসস্ট্যান্ড চত্বর সহ শহরের নানা এলাকায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তার দাবিতে গত শনি ও রবিবার রায়গঞ্জে ব্যবসা ও পরিবহণ বন্ধ ডাকেন ব্যবসায়ী ও বেসরকারি বাস মালিকরা। এ দিন সকাল থেকে শহরের পরিবেশ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসলেও দুপুর তিনটে নাগাদ আদিবাসী হামলার গুজবে ফের শহরের বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। বহু ব্যবসায়ী দোকানপাট বন্ধ করে দেন।
প্রশাসনের নির্দেশে পুলিশ শহরে মাইকিং করে বাসিন্দাদের গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদন জানায়। এ দিন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা সহ বিদ্বজ্বনেরা দুষ্কৃতীদের কঠোর শাস্তি, শহরে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার দাবিতে রায়গঞ্জের স্কুলরোড থেকে শিলিগুড়িমোড় পর্যন্ত মৌন মিছিলে সামিল হন।