গণধোলাই রুখতে সচেতনতার প্রচার। নিজস্ব চিত্র
হবিবপুরের ছেলেধরা কাণ্ডে অবশেষে নড়েচড়ে বসল পুলিশ প্রশাসন। বুধবার ছেলে ধরা সন্দেহে হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডীতে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তিকে খুঁটিতে বেঁধে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে পুলিশ। ওই দিনই ঘটনাস্থল থেকে আটক হওয়া তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা হল বাশু বিশ্বাস, জীবন হালদার এবং ছোটন সিংহ। বুলবুলচণ্ডীর বিভিন্ন গ্রামে তাদের বাড়ি। ওই ঘটনায় ৩০৪ নম্বর ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। কড়া পদক্ষেপ করার পাশাপাশি গ্রামবাসীদের সচেতন করতে স্কুলের ছাত্রী, অঙ্গনওয়াড়ি, আশাকর্মীদেরও নামানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা।
এরই মধ্যে এ দিন সকালে হবিবপুর থানার জাজইল গ্রামে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তিকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে দ্রুত পুলিশ গিয়ে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তবে তাঁকে মারধর করা হয়নি বলে পুলিশ দাবি করেছে। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রামগুলিতে পুলিশি টহলদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।
গত, শুক্রবার থেকে হবিবপুর ব্লকে শুরু হয়েছে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি। তবে বুধবারের ঘটনা সমস্ত ঘটনাকেই ছাপিয়ে গিয়েছে। ওই দিন চল্লিশোর্ধ অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তিকে খুঁটিতে বেঁধে অমানবিক ভাবে মারধর করা হয়। পরে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তারপরেই কড়া পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে পুলিশ। মারধরের ঘটনাটির মোবাইলে ভিডিয়ো ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই ফুটেজ দেখেই মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। হবিবপুরে সপ্তাহ খানেক ধরে তাঁকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছিল।
ঘটনার পর থেকে বুলবুলচণ্ডীর ডুবাপাড়া, রামকান্তপুর সহ একাধিক গ্রাম পুরুষশূন্য। অনেক মহিলাও বাড়ি ছাড়া। পুলিশের অভিযানের ভয়ে বহু বাড়িতে তালা ঝুলছে। একই সঙ্গে পুলিশের টহলদারিও চলছে। এ দিনই ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে আরএন রায় বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের র্যালি হয়েছে। প্রধানশিক্ষিকা পারমিতা ভট্টাচার্য বলেন, মেয়েদের মাধ্যমে বাড়ির অন্দরে বার্তা পৌঁছনোর চেষ্টা হচ্ছে।