মিত্র যখন ‘শত্রু’, লুকোতে কলকাতায়

গঙ্গারামপুর পুরসভার মোট কাউন্সিলর ১৮ জন। তৃণমূলের দখলে থাকা এই পুরসভাটি এত দিন ছিল বিরোধী শূন্য।

Advertisement

নীহার বিশ্বাস

গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৯ ০৫:২১
Share:

—ফাইল চিত্র।

বিপ্লব মিত্রের হাত থেকে গঙ্গারামপুর পুরসভাকে বাঁচাতে কাউন্সিলরদের গোপন আস্তানায় পাঠাল তৃণমূল শিবির। বিপ্লব যাতে কোনও ভাবেই কাউন্সিলরদের নিজের শিবিরে নিয়ে যেতে না পারেন, তার জন্যই এই পরিকল্পনা বলে তৃণমূল শিবিরের দাবি। আর এই কাজ করতে বিপ্লবের চরম বিরোধী বলে পরিচিত সোনা পালকে ময়দানে নামিয়েছে ঘাসফুল শিবির।

Advertisement

এ নিয়ে সোনা পাল বলেন, ‘‘ওঁর (বিপ্লবের) সঙ্গে আমাদের কোনও জনপ্রতিনিধিই যাবেন না। কিন্তু ভয় দেখিয়ে, জোর করে কাউন্সিলরদের নিজের দিকে টানতে চাইছেন তিনি। তাই আমরা ১০ জন কাউন্সিলরকে কলকাতায় রেখে দিয়েছি। তাই জেলা পরিষদ বা পুরসভা, কোনওটাই উনি দখল করতে পারবেন না। খালি হাতেই ফিরতে হবে।’’ বিপ্লবের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘এসব মিথ্যে কথা। নির্দিষ্ট সময়েই সব প্রমাণ করব। সবে ফিরেছি। দুই-এক দিনের মধ্যে আস্থা প্রমাণ হবে।’’

গঙ্গারামপুর পুরসভার মোট কাউন্সিলর ১৮ জন। তৃণমূলের দখলে থাকা এই পুরসভাটি এত দিন ছিল বিরোধী শূন্য। সদ্য প্রাক্তন তৃণমূল নেতা বিপ্লব মিত্রের ভাই প্রশান্ত মিত্র ছিলেন পুরপ্রধান। কিন্তু সম্প্রতি বিপ্লব শিবির পালটে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই পুরসভায় টানাপড়েন শুরু হয়। শোনা গিয়েছিল, পুরসভার কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন প্রশান্ত। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। তৃণমূল শিবিরের দাবি, গোললাইন সেভ করে পুরসভা বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন অর্পিতা। প্রশান্তকে তৃণমূল থেকে বহিষ্কারও করা হয়। অনাস্থাও আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে।

Advertisement

সেই অনাস্থা নিয়ে ভোটাভুটি অবশ্য এখনও হয়নি। পুরসভা সূত্রে খবর, প্রশান্ত এখনও প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরকে দলে পাননি। তাই অনাস্থা আনার ১২ দিন পরেও তিনি আস্থা প্রমাণে ভোট করাতে পারেননি। এখন পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে পুর আইনের বিশেষ ধারা প্রয়োগ করে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ তুলে দিয়ে আপাতত সাত দিনের বাড়তি সময় হাতে রেখে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন প্রশান্ত।

এর মধ্যেই শনিবার প্রশান্তের দাদা বিপ্লব জেলায় ফেরেন। দাদার সঙ্গে পরামর্শ করে যাতে কোনও কাউন্সিলরকেই নিজেদের দিকে টানতে না পারেন প্রশান্তরা, তার জন্য আর ঝুঁকি নেয়নি তৃণমূল শিবির। সোনার নেতৃত্বে পুরসভার ১০ কাউন্সিলরকে কলকাতার গোপন আস্তানায় রেখে বিপ্লবকে কার্যত কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন সোনা পাল।

তৃণমূল সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রশান্তকে আস্থা ভোট ডাকতেই হবে। তত দিন পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরদের মিত্র পরিবারের ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখলে আস্থা ভোটে জিততে পারবেন না প্রশান্ত। সে ক্ষেত্রে নিজের শহরের পুরসভাটি দখলের স্বপ্ন পূরণ হবে না বিপ্লবদের। এই ছক কষেই কাউন্সিলরদের গোপন আস্তানায় রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন