প্রতীকী ছবি।
রাতদুপুরে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে থানা থেকে ২০০ মিটারের মধ্যেই ৮ রাউন্ড গুলি চলল মাটিগাড়ায়।
সোমবার রাত দু’টো নাগাদ মাটিগাড়া থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে প্রথমে বিজেপির বুথ সভাপতি, পরে মঙ্গলবার মণ্ডল সভাপতির উপর হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় তিন জন আহত হয়েছেন। এ দিনই তৃণমূলের এক বুথ সভাপতির উপরে বিজেপি সমর্থকরা হামলা করে বলে পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। তিনটি মামলায় উভয় পক্ষের ১৮ জনের নাম জড়িয়েছে। ঘটনায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। আহতরা সকলেই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
এ দিন মাটিগাড়া থানার ওসি সুবল ঘোষের হাতে দু’টি কার্তুজের খোলও জমা দেন বিজেপি নেতারা। শিলিগুড়ি কমিশনারেটের সিপি ভরতলাল মিনা বলেন, ‘‘মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ পুলিশকর্তাদের দাবি, অভিযুক্তদের খোঁজে এলাকা জুড়ে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ জানায়, খাপরাইল মোড়ে বিজেপির বুথ সভাপতি তরুণ মণ্ডলের হোটেলে সোমবার রাত ১১টা নাগাদ কিছু তৃণমূল সমর্থক চড়াও হয় বলে অভিযোগ। সেখানে দীর্ঘ বচসার পর রাত দুটো নাগাদ তাঁকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, মারধর করা হয় তাঁর ভাই উত্তমকেও। সেখানেই কয়েক রাউন্ড গুলি চলে বলেও দাবি বিজেপির।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ালে এ দিন সকালে ভাঙাপোল এলাকায় বিজেপির মণ্ডল সভাপতি বাপ্পা সরকারের বাড়িতে গিয়েও হামলা চালানো বলে বিজেপির তরফেই অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন থানায় বিক্ষোভ দেখিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা করেন তাঁরা। বিজেপির জেলা সভাপতি (সমতল) অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা একদিন সময় দিচ্ছি। দোষীরা গ্রেফতার না হলে আমরা আরও বড় আন্দোলনে নামব। দু’জায়গায় অন্তত ১৫ রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছে।’’
বিজেপির দাবি, হামলার পিছনে মাটিগাড়ার তৃণমূল নেতা তথা তাদের কার্যকরী ব্লক সভাপতি দুর্লভ চক্রবর্তীর মদত রয়েছে। যদিও তাঁর নাম অভিযোগে নেই।
বিজেপির এই সব অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন দুর্লভ। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের কেউ অস্ত্র নিয়ে হামলা করেনি। দলের কর্মীরা বিজেপির হাতে মার খেলে আমাকে পাশে দাঁড়াতেই হবে।’’ তৃণমূলের তরফে উল্টে অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের স্থানীয় নেতা বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর উপরে অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের ন’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে ঘাসফুল শিবির।
এখানে অবশ্য মাটিগাড়া এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও ধরা পড়েছে। দুর্লভের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের মাটিগাড়া ব্লক সভাপতি অর্ধেন্দু বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘দুর্লভ শিবমন্দির এলাকার পরিবেশ নষ্ট করেছেন। এখন তিনি মাটিগাড়ায় এসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন।’’
এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছেন দুর্লভ। তিনি বলেন, ‘‘অর্ধেন্দুবাবুকে কোনও ভোটেই পাওয়া যায় না। তিনি দলের কাজ কী করেন?’’