কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে স্বস্তিতে ভরতপুরের নিলম্বিত তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ভরতপুরের সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজিদের শিলান্যাসের মামলায় হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাই কোর্ট। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় আইনশৃঙ্খলা বজায় রেখে কর্মসূচির আয়োজন করতে হবে হুমায়ুনকে। রাজ্যকেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হুমায়ুনের মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব সংবিধানবিরোধী বলে অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে আদালত হস্তক্ষেপ করবে না। অর্থাৎ, হুমায়ুনের মসজিদের শিলান্যাসে আপাতত কোনও বাধা নেই। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না-হয়, তা পুলিশকে নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।
বেলডাঙায় মসজিদের শিলান্যাস নিয়ে মামলাকারীর পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি জানান, এই ধরনের অনুষ্ঠানে এলাকায় অশান্তির সম্ভাবনা রয়েছে। শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে। রাজ্যকে এলাকার বাসিন্দাদের, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রের অবস্থানও জানতে চেয়েছিল আদালত। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, এলাকাটি সংবেদনশীল। আগেও সেখানে অশান্তি হয়েছে। তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনও করতে হয়েছে। আদালত জানায়, নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে রাজ্যকে সহায়তা করবে কেন্দ্রীয় সরকারও। শিলান্যাসের কর্মসূচিকে ঘিরে যাতে কোনও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি না-তৈরি হয়, তা তাদের নিশ্চিত করতে হবে।
অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনই ৬ ডিসেম্বর বেলডাঙায় ওই নামের মসজিদের শিলান্যাস করবেন বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন। এই ঘোষণার পর থেকে তৃণমূল তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছিল। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বহরমপুরের সভার আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়, হুমায়ুনকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিধায়ক। সভাস্থল থেকে বেরিয়ে যান এবং জানান, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শিলান্যাস তিনি করবেনই। মসজিদের জমিও চিহ্নিত। সেই সঙ্গে ২২ ডিসেম্বর নতুন দল তৈরির ঘোষণা করবেন বলেও জানিয়ে দেন ক্ষুব্ধ হুমায়ুন। তাঁর শনিবারের কর্মসূচিতে আপাতত আর কোনও বাধা রইল না।