তৃণমূলের দাবি, তারাই প্রধান শক্তি

শনিবারের রক্তাক্ত ঘটনায় অস্বস্তি ঢাকতে মেদিনীপুরের সাংসদের দাবি, গঙ্গারামপুরে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালিয়েছে।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৯ ০১:১৯
Share:

বৈঠকে: পুরাতন মালদহ পুরসভার পুরপ্রধান ও তৃণমূলের কাউন্সিলরদের নিয়ে নুর ম্যানসনে বৈঠক করলেন মালদহ জেলা তৃণমূলের সভাপতি মৌসম নুর। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

দক্ষিণ দিনাজপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় বিজেপির কর্মসূচিকে ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড হয়। কিন্তু শনিবার বালুরঘাটে পদযাত্রা রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু বাতিল করেছেন। রবিবার জেলা নেতৃত্বের তরফে বালুরঘাটে পথ অবরোধ কর্মসূচিও বাতিল হল। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দিলীপবাবুর বক্তব্য থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, বালুরঘাটে এখনও একক সাংগঠনিক জোরে বড় আন্দোলন সম্ভব নয়। জেলা সদর বালুরঘাটে তাই বিজেপি ঘোষিত পর পর দু’দিনের আন্দোলন কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছে।

Advertisement

শনিবারের রক্তাক্ত ঘটনায় অস্বস্তি ঢাকতে মেদিনীপুরের সাংসদের দাবি, গঙ্গারামপুরে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালিয়েছে। পুলিশকে লক্ষ করে ইট পাটকেল ছুড়ে গাড়ি ভাঙচুর করেছে। তা না হলে তাদের কয়েক জন কর্মী জখম হন কি করে ? দলের জেলা সভাপতির গাড়িও ভাঙচুর হয়েছে বলে দিলীপের দাবি।

বিজেপির ওই দাবি উড়িয়েছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি বিজয় মিছিলের নামে অশান্তি তৈরি করেছে। দিলীপবাবু তাকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। গঙ্গারামপুরে যা হল, তা মানুষ মেনে নেবেন না।’’ বেগতিক বুঝে দিলীপবাবুদের বালুরঘাটে পিছু হটতে হল বলে অর্পিতা দাবি করেন।

Advertisement

বস্তুত বালুরঘাট লোকসভা আসনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে বিজেপির কাছে শেষ অবধি হেরে যেতে হয়েছে তৃণমূলকে। মাত্র ৩৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে হার হয়েছে তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতার। বামেদের উজার করা ভোটে বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারের জয় সহজ হয়েছে, একাংশ বামনেতা তা স্বীকার করেন।

তার জেরে ভোট পরবর্তী বামেদের পার্টি অফিস পুনরুদ্ধার, বন্ধ হয়ে থাকা অফিস খোলার পাশাপাশি খোদ বিপ্লব মিত্রের খাসতালুক গঙ্গারামপুরে তৃণমূলের পার্টি অফিস বিজেপির দখলে নেওয়ার একাধিক ঘটনার পর এদিনের ধুন্ধুমার কাণ্ড থেকে পরিষ্কার একটি ছবির ইঙ্গিত মিলেছে বলে দাবি শাসক শিবিরের। তা হল, বিজেপি নয়, এ জেলায় এখনও সাংগঠনিক শক্তিকে এগিয়ে তৃণমূল। একাংশ তৃণমূলের প্রশ্রয়ে কি বিজেপির এদিনের আস্ফালন, সন্দেহ দলের একাংশে। এসপি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গঙ্গারামপুরে হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিৃত করা গিয়েছে। তাদের ধরতে তল্লাশি চলছে।’’

অর্পিতার নেতৃত্বাধীন এ জেলার তৃণমূলকে বিজেপির পাশাপাশি এখন ‘ছদ্ম তৃণমূল’ ও বামেদের একাংশের সঙ্গে যুঝতে হবে বলে দলের অনেকের আশঙ্কা। দিলীপবাবু বহিরাগতের পরিচয় স্পষ্ট করেননি। কিন্তু দল সূত্রেই জানা গিয়েছে, গঙ্গারামপুরে বিজেপির ওই পদযাত্রার ভিড়ে শাসক দলের বিরুদ্ধগোষ্ঠীর একাংশের সহায়তার অভিযোগ দলের অন্দরে সন্দেহ বাড়িয়েছে। এদিন প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের ফোন বন্ধ ছিল। তবে বিজেপির গঙ্গারামপুরের ওই আন্দোলনের প্রবণতা বালুরঘাটের ক্ষেত্রে সফল না-হওয়ার সম্ভবনা থেকে ঝুঁকি না নিয়ে বিজেপিকে বিক্ষোভ আন্দোলন বাতিল করতে হল। বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকার অবশ্য জানান, বিশেয কারণে তারা এদিন ওই বিক্ষোভ কর্মসূচিস্থগিত করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন