গঙ্গাজলও জাল! বোতলে নিজের ছবি সেঁটে আসল জল বিলি করলেন তৃণমূল নেতা

তার পরে বোতলে ভরে, তাতে এক দিকে মহাদেব আর অন্য দিকে নিজের ছবি সেঁটে বিলি করলেন এ দিন। যার মধ্যে রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন অন্য দলের নেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৮ ০২:৪৪
Share:

গঙ্গাজল: এই বোতলই বিলি করা হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।

শহরে যে গঙ্গাজল কিনতে পাওয়া যায়, তার বেশিরভাগই নাকি ‘জাল’। এই ‘ঘাটতি’ মেটাতেই প্রায় তিনশো কিলোমিটার দূরে বিহারের সুলতানগঞ্জ থেকে গঙ্গাজল নিয়ে এলেন শিলিগুড়ির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মানিক দে। তার পরে বোতলে ভরে, তাতে এক দিকে মহাদেব আর অন্য দিকে নিজের ছবি সেঁটে বিলি করলেন এ দিন। যার মধ্যে রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন অন্য দলের নেতারা।

Advertisement

বেশ ঘটা করেই এ দিন অনুষ্ঠানটি করেন মানিকবাবু। হাজির ছিলেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার। জলের ছোট্ট বোতলের সঙ্গে তিনি সকলের হাতে মিষ্টিও তুলে দিয়েছেন। মানিকবাবু বলেন, ‘‘ধর্মপরায়ণ মানুষের কাছে শ্রাবণ মাসে সঠিক গঙ্গাজল পৌঁছে দিতে চাই। সে জন্য সুলতানগঞ্জে গিয়ে ৮০ লিটার গঙ্গাজল এনেছি।’’ মানিকবাবুর দাবি, ‘‘ভেজাল গঙ্গাজলে ছেয়ে গিয়েছে শহর। অনেকে বাজারে সেই জল টাকা দিয়ে কেনেনও।’’ তাঁদের হাতে আসল গঙ্গাজল তুলে দিতেই তাঁর এই অভিযান, জানান তিনি।

কিন্তু এর মধ্যে রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছে অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। তাদের কথায়, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে পঞ্জাবিপাড়া ও লাগোয়া এলাকায় অনেক অবাঙালি লোকজন বসবাস করেন। তাঁদের অনেকেরই নিত্যপুজোয় গঙ্গাজল লাগে। সেই জল হাতে হাতে পৌঁছে দিয়ে মানিকবাবু নিজের ভিত শক্ত করছেন। বিশেষ করে এই অঞ্চলে সম্প্রতি জোর বাড়াচ্ছে বিজেপি। সে দিক থেকে মানিকের এটা নয়া কৌশলও হতে পারে, দাবি বিরোধীদের। এ ভাবে মহাদেবের ছবির সঙ্গে নিজের ছবি সেঁটে গঙ্গাজলের বোতল বিলির রাজনীতি করা ঠিক নয় বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন কংগ্রেস, সিপিএমেরও অনেকে।

Advertisement

তৃণমূলের একটি অংশেরও বক্তব্য, ওই এলাকায় বিজেপির প্রভাব ইদানীং বাড়ছে। রামনবমীর মিছিলের দিনে ওই এলাকার বাসিন্দাদের অনেককে অংশগ্রহণ করতে দেখা গিয়েছে বলে তৃণমূলের কয়েক জন একান্তে জানান। ফলে, জটাধারী শিব, গঙ্গাজল, সন্দেশ নিয়ে মানিকবাবু আসরে নামার আড়ালে ভোটের হিসেব যে রয়েছে, তা একান্তে মানছেন দলের অনেকেই।

আরও পড়ুন: কেরলে বন্যাত্রাণ নিয়ে ‘ঢাক’ পেটালেন দিলীপ

মানিক অবশ্য এই দাবি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।’’ রঞ্জন সরকারের যুক্তি, ‘‘গঙ্গাজলের নাম করে অনেক কিছু বিক্রি হয়ে থাকে। বাড়িতে অনেকেই গঙ্গাজল রাখেন। তাই ভিনরাজ্য থেকে গঙ্গার জল এনে বিলি করাটা পুণ্যের কাজ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন