কার হাতে থাকবে মেলা, তরজায় উঠল কাটমানির অভিযোগও

কাটমানি নেওয়ায় অভিযুক্ত রঞ্জন

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এলাকায় আরও অনেকেই টাকা দিয়েছেন। কিন্তু এখনও ভয় পাচ্ছেন মুখ খুলতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৯ ০৪:৪৩
Share:

বিক্ষোভ: রথের মেলার আয়োজন নিয়ে তরজা। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ এলাকার ব্যবসায়ীদের। শিলিগুড়ির ঘুঘুমারি বাজার এলাকায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

মেলার আয়োজনের অনুমোদন পাওয়া নিয়ে শুরু হয়েছিল ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ। সেটাই ক্রমে বদলে গেল কাটমানির অভিযোগে। আর অভিযোগের আঙুল উঠল ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ও বরো চেয়ারম্যান রঞ্জন শীলশর্মার দিকে। রঞ্জন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার কোর কমিটির নেতাও। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির নেতাদের বিরুদ্ধে চিটফান্ড চালানোর পাল্টা অভিযোগ এনেছেন রঞ্জন। তাঁর দাবি, ‘‘এলাকার দখল নিতে বিজেপি নেতাদের মদতে মিথ্যা প্রচার শুরু হয়েছে।’’ দলের নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পৌঁছেছে তৃণমূল নেতৃত্বের কাছেও। দলের জেলা সভাপতি গৌতম দেব বলেন, ‘‘বিধানসভা চলায় কলকাতায় আছি। দলীয় স্তরে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’’

Advertisement

ঘোঘোমালি বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তাঁদের নানাভাবে হেনস্থা করে, পুলিশের ভয় দেখিয়ে তোলা আদায় করেন রঞ্জন ও তাঁর দলবল। বাজারের মুদির দোকানদার শচীন সাহার দাবি, ‘‘বাঁধের মেরামতির জন্য দোকান তোলা হল। নতুন করে দোকান করার জন্য ৬ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। শচীনের কথায়, ‘‘অনেক আবেদনের পরে ঋণ করে আড়াই লক্ষ টাকা দিয়েছি রঞ্জন শীলশর্মাকে। ভয়ে মুখ খুলতে পারিনি। কিন্তু এখন কাটমানি ফেরত চাই।’’ বাজারের পান ব্যবসায়ী বিভাস সাহার দাবি, ‘‘দোকানে জুয়া খেলা হয় বলে অভিযোগ তুলে ৬ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়েছিল। ১ লক্ষ টাকা দেওয়ার পরে আর পারিনি বলে দোকানের সামনেই ওয়ার্ডের জঞ্জাল ফেলা হত।’’ বিভাসের কথায়, ‘‘আমি এরপরে আদালতের দ্বারস্থ হই। আদালত থেকে রায় নিয়ে এক বছর পরে দোকান খুলতে পারি। ততদিনে দোকানের আড়াই লক্ষ টাকার মাল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। টাকা ফেরত চাই।’’

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এলাকায় আরও অনেকেই টাকা দিয়েছেন। কিন্তু এখনও ভয় পাচ্ছেন মুখ খুলতে। ধীরে ধীরে সবাই সামনে এসে অভিযোগ করবেন বলে তাঁদের দাবি। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ঘোঘোমালি বাজার কমিটির কর্মকর্তা ও বিজেপি নেতা তুফান সাহা। তাঁর দাবি, ‘‘ব্যবসায়ীদের কাছে কাটমানি এবং তোলা আদায়ের কথা শুনেছি। রঞ্জনবাবুর নামও শুনেছি। কয়েকজনকে কিছু টাকা করে ফেরত দেওয়া হয়েছে বলেও শুনতে পাচ্ছি।’’ কাটমানির অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেও তদন্তের দাবি উঠেছে। ওই এলাকারই বাসিন্দা ও জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল বলেন, ‘‘সমস্ত কিছুর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। মেলাকে সামনে রেখে কিছু করা হলে তাও দেখতে হবে।

Advertisement

রঞ্জনের পাল্টা দাবি, ‘‘আমার নামে মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন কথা ছড়াচ্ছে। প্রমাণ করুক আমি টাকা নিয়েছি। অভিযোগ করুক, এতে আমরাও আইনি লড়াইয়ে যাওয়া সহজ হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির তুফান সাহা এলাকায় চারটি বড় কমিটির মাথা। সেখান থেকে নিয়মিতভাবে আসা টাকার হিসেব কোথাও দেন না। তিনি একটি চিটফান্ড চালান।’’ তুফান বলেন, ‘‘নিজে ফেঁসে গিয়ে এখন আমাকে বদনাম করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন